কুলিয়ারচরের সব সড়কই নাজুক

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার বাজরাবাজার-আবদুল্লাহপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় সড়কের পিচ উঠে গেছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় অনেক জায়গায় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। গত মঙ্গলবার তোলা ছবি l প্রথম আলো
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার বাজরাবাজার-আবদুল্লাহপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় সড়কের পিচ উঠে গেছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় অনেক জায়গায় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। গত মঙ্গলবার তোলা ছবি l প্রথম আলো

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার প্রধান সড়ক ১২টি। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় এর মধ্যে সাতটিই চলাচলের অনুপযোগী। বাকি পাঁচটি সড়কেও খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে জনসাধারণকে মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুলিয়ারচর উপজেলার প্রধান ১২টি সড়কের সাতটিই বেহাল। বাকি পাঁচটিরও বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ রয়েছে। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান ১৯৯৬ সালে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী থাকাকালীন উপজেলার আগের সড়কগুলো করা সংস্কার হয় এবং নতুন করে নির্মাণ হয় আরও কয়েকটি সড়ক। তবে নির্মাণের পর অধিকাংশ সড়কই আর সংস্কার করা হয়নি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আগরপুর-ভাগলপুর সড়কটির কুলিয়ারচর অংশের দৈর্ঘ্য ৪ দশমিক ২৮ কিলোমিটার। এর পুরো অংশজুড়ে বড় বড় গর্ত হয়ে আছে। গর্তে বৃষ্টির পানি জমেছে। যানবাহন চলছে ধীরগতিতে। অনেক আগেই স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগ সংস্কারের জন্য দুই কোটি ৫৪ লাখ টাকার প্রস্তাব পাঠিয়েছে। তবে এখনো তা আলোর মুখ দেখেনি।
৯ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের দাঁড়িয়াকান্দি-বেলাব সড়কটি নির্মিত হয় ২০১০ সালের মধ্যভাগে। কার্যাদেশ অনুযায়ী কাজ না হওয়ায় নির্মাণের চার বছরের মধ্যে সড়কটি বেহাল হয়ে পড়ে। পিচ উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় পিরিচপুর-লক্ষ্মীপুর সড়কটিও যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
৪ দশমিক ১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের কুলিয়ারচর-নোয়াপাড়া সড়কটির আড়াই কিলোমিটার কাঁচা। টানা বৃষ্টিতে সড়কটি বলতে গেলে কাঁদার নিচে চলে গেছে। পাকা অংশ থেকেও পিচ উঠে গেছে। সংস্কারের জন্য জেলা পরিষদ ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিলেও এখনো কার্যাদেশ দেওয়া হয়নি।
ছয়সূতি-বাংলাবাজার সড়কটির দৈর্ঘ্য ছয় কিলোমিটার। এর মধ্যে ৬২০ মিটার কাঁচা। ছয়সূতি ইউনিয়ন অফিস-পৈলানপুর সড়কটির পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে আড়াই কিলোমিটারই কাঁচা। এক কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। তবে কাজ শুরু হয়নি। বাজরা বাজার-আবদুল্লাহপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় সড়কটির ৩ দশমিক ৭৭ কিলোমিটারের মধ্যে ১ দশমিক ৮৪ কিলোমিটার কাঁচা। এই তিনটি সড়কের অবস্থাও কুলিয়ারচর-নোয়াপাড়া সড়কের মতোই। ফলে স্বাভাবিক যাতায়াতব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ঝুঁকি নিয়ে কিছু সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক চলাচল করলেও পায়ে টানা রিকশা চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
রামদি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিব মিয়া বলেন, ‘আমাদের সড়কগুলো বসন্ত রোগে আক্রান্ত। শরীরজুড়ে বড় বড় গর্ত। হাঁটলে পা ভাঙে এবং গাড়িতে উঠলে সেটাও উল্টে যায়।’
জানতে চাইলে কুলিয়ারচর উপজেলা স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল বিভাগের প্রকৌশলী অসিত বরণ দেব বলেন, এ কথা যে ঠিক নির্মাণের পর বেশির ভাগ সড়ক সংস্কার হয়নি। এ কারণে সড়কগুলো বেহাল হয়ে পড়েছে। তবে অধিকাংশ সড়ক সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকিগুলোর জন্যও পাঠানো হবে।