নয় মাস ধরে বেতন নেই, মানবেতর জীবনযাপন

ঝিনাইদহের মহেশপুর পৌরসভার সহকারী কর আদায়কারী তসলিম হোসেন। তাঁর একমাত্র মেয়ে রোকাইয়া ইসলাম (৯) বায়না ধরেছে ঈদের পোশাক কিনতে হবে। প্রতিবেশী সবার কেনা হয়ে গেছে। কিন্তু তসলিমের তো ঘরের বাজার করারই টাকা নেই।
নয় মাস ধরে পৌরসভা থেকে বেতন-ভাতা পান না তসলিম। একই অবস্থা পৌরসভার আরও ৪২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর। ঈদের আগে বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গত মঙ্গলবার কর্মবিরতি পালন করেন এবং পৌর ভবনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন।
তসলিম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাজারে এমন কোনো দোকান নেই যেখানে দেনা করিনি। সবাইকে বলেছি, বেতন পেলেই টাকা দিয়ে দেব। এমন করে নয় মাস চলে গেল। বেতন আর পারছি না।’ বাবা-মাসহ পাঁচজনের সংসার তাঁকে চালাতে হয়।
মা, স্ত্রী, এক ছেলেসহ চারজনের সংসার চালাতে হয় পৌরসভার ময়লা সরানোর ট্রাকের চালক গোলাম মোস্তফাকে। তিনি বলেন, ‘ধারে দোকান থেকে মালামাল নিতে নিতে এখন আর কেউ দিতে চান না। প্রতি মাসেই দোকানদারেরা খোঁজ নেন বেতন হয়েছে কি না।’
পৌরসভার কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মহিবুল ইসলাম খান জানান, পৌরসভায় নিয়মিত দুজন কর্মকর্তা ও ৪১ জন কর্মচারী আছেন। নয় মাসের বেতন-ভাতা বাবদ পৌরসভার কাছে তাঁরা প্রায় ৬৫ লাখ টাকা পান। এ ব্যাপারে পৌরসভার মেয়র আমিরুল ইসলাম খানের কাছে একাধিকবার ধরনা দিলেও তিনি বেতন পরিশোধের কোনো ব্যবস্থা নেননি। তাই কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে মেয়র আমিরুল ইসলাম খান বলেন, ‘পৌরসভায় রাজস্ব আয় খুবই কম। যে কারণে সময়মতো কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দেওয়া সম্ভব হয় না। বেতন না পেয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। আশা করছি দ্রুত একটা সমাধান করতে পারব।’