তিস্তার ভাঙনে ভেঙে পড়ছে বিদ্যালয় ভবন

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের চর ঢুষমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দোতলা ভবনের একাংশ তিস্তায় ভেঙে পড়েছে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে ২০১০ সালে নির্মিত এই ভবনটি পুরো বিলীন হয়ে যাবে। গতকাল সকালে তোলা ছবি l প্রথম আলো
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের চর ঢুষমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দোতলা ভবনের একাংশ তিস্তায় ভেঙে পড়েছে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে ২০১০ সালে নির্মিত এই ভবনটি পুরো বিলীন হয়ে যাবে। গতকাল সকালে তোলা ছবি l প্রথম আলো

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় তিস্তা নদীর ভাঙনে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের তিস্তা নদীর চরাঞ্চলে চর ঢুষপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৬৩ সালে স্থাপিত হয়। ২০০৬ সালে একতলা ও ২০১০ সালে দোতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। এখানে শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী রয়েছে ৩০০ জন। প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষক রয়েছেন পাঁচজন।
চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মাসুমা খাতুন বলে, ‘দেখতে দেখতে স্কুল ভবনটা নদীত চলি গেল। এলা হামার আর পড়াশোনার জায়গা থাকল না।’ এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘অনেক কষ্ট করিয়া এটে একটা পাকা দালানের স্কুল হইল, তাও যদি নদীত ভাঙি যায় তাইলে ছাওয়াগুলার পড়াশোনা করবে কোনটে?’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল ইসলাম বলেন, দুই বছর আগে তিস্তা নদী বিদ্যালয় থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ছিল। নদী ভাঙতে ভাঙতে এ বছর বিদ্যালয় ভবনে আঘাত হেনেছে। শেষ পর্যন্ত বিদ্যালয় ভবনটি আর রক্ষা করা গেল না।
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, চরের একমাত্র বিদ্যালয়টি ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করতে উপজেলা প্রশাসনকে অনেকবার জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
নজরুল ইসলাম বলেন, এর আগে এই এলাকায় তেমন নদীভাঙন ছিল না। এখন শিক্ষার্থীরা কোথায় পড়াশোনা করবে, তা নিয়ে অভিভাবকেরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, ওই বিদ্যালয় ভবনটি ভেঙে গেছে। যেকোনো সময় এর একটি অংশ নদীগর্ভে চলে যাবে। এ ভবন ছাড়াও পাশে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে নদীভাঙন চলছে। পাঁচ-ছয়জন এলাকাবাসী জানান, গত এক সপ্তাহে চর ঢুষমারা এলাকায় নদীভাঙনে ২০টি বাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বসতভিটাসহ ৫০ একর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর রংপুর কার্যালয়ের সহকারী প্রথামিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয় ভবনটি নদীগর্ভে চলে গেলে ওই চর এলাকায় আপাতত টিনের ঘর করে বিদ্যালয় স্থাপন করা হবে। সেখানেই শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলবে।