গ্রেপ্তারে অনুমতির বিধান থাকছেই

দায়িত্ব পালনসংক্রান্ত ফৌজদারি মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র গ্রহণের আগে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে সরকারি অনুমোদন লাগবে। এ বিধান রেখেই সরকারি কর্মচারী আইন হচ্ছে। গতকাল রোববার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত প্রশাসনিক উন্নয়নসংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায় এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তবে খসড়াটি আরও পর্যালোচনা করে আগামী সভায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সভার বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সভায় আইনের খসড়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে পার্শ্ববর্তী ভারতসহ অন্যান্য দেশে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুরক্ষায় কী ব্যবস্থা আছে তা দেখে এবং এ দেশের অন্যান্য আইনের সঙ্গে প্রস্তাবিত আইনের সাংঘর্ষিক কিছু আছে কি না, তা পর্যালোচনা করে আগামী সভায় খসড়াটি চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে।
জনপ্রশাসন সচিব বলেন, তিনি মনে করেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কিছু সুরক্ষা থাকা উচিত।
প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী দুর্নীতি দমন কমিশন বা অনুরূপ সাংবিধানিক ক্ষমতাপ্রাপ্ত সংস্থা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ তদন্ত করে আদালতে অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন। তবে আদালতে অভিযোগপত্র গৃহীত হওয়ার আগে কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেপ্তারের প্রয়োজন হলে সরকারের অনুমোদন লাগবে।
এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইনে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মামলা করার ক্ষেত্রে সরকারের অনুমোদন নেওয়ার বিধান রাখা হয়েছিল। কিন্তু সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে হাইকোর্ট তা অবৈধ ঘোষণা করে বাতিল করেন। বর্তমানে দুর্নীতিসংক্রান্ত মামলায় এফআইআরের (প্রাথমিক তথ্যবিবরণী) পরই যে কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়।
বর্তমানে দুর্নীতি বা নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধ ছাড়া অন্য কোনো অপরাধে এক বছরের সাজাযোগ্য অপরাধ করলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করা হয়। প্রস্তাবিত আইনে চাকরিচ্যুত করতে সাজা তিন বছরের বেশি হতে হবে। এ অবস্থায় প্রস্তাবিত আইনটি অনুমোদন হলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতি প্রশ্রয় পাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, সংবিধানের ১৩৩ অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারীদের নিয়োগ, কর্মসম্পাদন ও আনুষঙ্গিক বিষয়ে আইন প্রণয়নের প্রয়োজন আছে। স্বাধীনতার পর এই প্রথম এ ধরনের আইন হতে যাচ্ছে।