শুনানির অপেক্ষায় সাঈদী ও কামারুজ্জামানের আপিল

মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের আপিল শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।
জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি শেষে গতকাল মঙ্গলবার রায় অপেক্ষাধীন (সিএভি) রাখা হয়েছে।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম প্রথম আলোকে বলেন, সাঈদীর মামলাটি আদালতের কার্যতালিকায় ছিল, শুনানির দিনও ধার্য ছিল। তবে কাদের মোল্লার মামলার জন্য তা শুনানি হয়নি। এখন বিষয়টি আদালতে উপস্থাপন করা হবে। অবকাশের আগে এটা উপস্থাপন করা হবে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। তাঁর বিরুদ্ধে আনা ২০টি অভিযোগের মধ্যে আটটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। এর মধ্যে ইব্রাহিম কুট্টি ও বিসাবালিকে হত্যার দায়ে সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের দুটি, ধর্মান্তরিত করার একটি এবং লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, নির্যাতনের তিনটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তবে দুটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ায় অন্য অভিযোগগুলোতে আলাদা করে কোনো দণ্ড দেওয়া হয়নি।
ওই রায় ঘোষণার ২৯ দিনের মাথায় ২৮ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষ আপিল করে। মৃত্যুদণ্ডাদেশ বাতিল করে খালাসের আরজি জানিয়ে আপিল করেন সাঈদী। অন্যদিকে ছয়টি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরও দণ্ড ঘোষণা না হওয়ায় এ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সাজা চেয়ে আপিল করে সরকারপক্ষ। এ দুটি আপিল শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ৯ মে কামারুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-২। তাঁর বিরুদ্ধে আনা সাতটি অভিযোগের মধ্যে সোহাগপুর ‘বিধবাপল্লিতে’ নির্বিচার হত্যাকাণ্ড ও গোলাম মোস্তফা হত্যাকাণ্ডের দায়ে (তৃতীয় ও চতুর্থ অভিযোগ) তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। বদিউজ্জামান ও দারাসহ ছয়জনকে হত্যার (প্রথম ও সপ্তম অভিযোগ) দায়ে যাবজ্জীবন এবং শেরপুর কলেজের অধ্যক্ষ সৈয়দ আবদুল হান্নানের প্রতি অমানবিক আচরণের দায়ে ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। অপর দুটি অভিযোগ থেকে খালাস দেওয়া হয়। ওই দণ্ডাদেশ বাতিল ও খালাস চেয়ে ৬ জুন আপিল করেন কামারুজ্জামান। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেনি রাষ্ট্রপক্ষ।
গতকাল নিজ কার্যালয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘কাদের মোল্লার আপিলে অনেক আইনগত প্রশ্ন ছিল। এগুলো সমাধান হয়ে গেছে বলে মনে করি। অ্যামিকাস কিউরিরা তাঁদের বক্তব্য রেখেছেন। আদালত এ ব্যাপারে যে সিদ্ধান্তই দেন না কেন, আইনগত বিষয়গুলোর ওপর পরবর্তী বিচারে বেশি সময় ব্যয় হবে বলে আমি মনে করি না।’