হাওরে ডুবে রাজধানীর কলেজছাত্রের মৃত্যু

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে হাওরে গোসল করতে নেমে ডুবে মারা গেছেন রাজধানীর এক কলেজছাত্র। গতকাল রোববার দুপুরে এ ঘটনা ঘটেছে।
মারা যাওয়া ছাত্রের নাম শাহাদাত হোসেন (১৮)। তাঁর বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার লালপুর গ্রামে। তিনি ঢাকার রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
পুলিশ এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কলেজের একই বর্ষের শিক্ষার্থী শাহাদাতের বন্ধু জিয়াউর রহমানের বাড়ি করিমগঞ্জের গুজাদিয়া গ্রামে। হাওর ঘুরে দেখার জন্য গত শনিবার জিয়াউরের সঙ্গে শাহাদাত ও তাঁদের আরেক সহপাঠী মো. মোস্তাহিদ কিশোরগঞ্জে যান। গতকাল সকাল ১০টার দিকে তাঁরা চামড়া বন্দরে গিয়ে ইঞ্জিনচালিত একটি নৌকা ভাড়া করেন। কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরির পর জিয়াউর ও শাহাদাত গোসল করতে পানিতে নামেন। মোস্তাহিদ তাঁদের গোসল করার দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করছিলেন। কিন্তু ডুব দেওয়ার পর শাহাদাতকে আর উঠতে না দেখে জিয়াউর ও মোস্তাহিদ চিৎকার শুরু করেন। ঘাটে উপস্থিত মাঝি ও লোকজন খোঁজাখুজি করেও শাহাদাতকে উদ্ধার করতে পারেনি। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তল্লাশি শুরু করে। বেলা দেড়টার দিকে পুলিশ শাহাদাতের মৃতদেহ উদ্ধার করে।
বন্ধুকে হারিয়ে নির্বাক জিয়াউর রহমান ও মোস্তাহিদ। জিয়াউর জানান, নৌকায় করে হাওর দেখার শখ ছিল শাহাদাতের। মূলত সে কারণেই ছুটির দিনে গ্রামে আসা। পানি দেখে শাহাদাত আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ে এবং গোসল করার আবদার করে।
জিয়াউর বলেন, ‘আবদার রাখলে বন্ধুকে চিরকালের জন্য হারাতে হবে জানলে পানির ধারে-কাছেও যেতাম না।’
মোস্তাহিদ বলেন, ‘আমি সাঁতার জানি না। এই কারণে শখ হলেও পানিতে নামেনি।’
খবর পেয়ে বিকেলে করিমগঞ্জে পৌঁছান শাহাদাতের পরিবারের সদস্যরা। তাঁর নিথর দেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁরা।
শাহাদাতের বাবা নূর হোসেন বলেন, ‘আজ (রোববার) ছিল জন্মাষ্টমীর বন্ধ। বন্ধের দিনে বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে শনিবার বাসা থেকে বের হয়ে যায় শাহাদাত।’