নতুন নতুন বাজার সৃষ্টির তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থনীতির ভিত শক্তিশালী করতে জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি করে বাংলাদেশি পণ্যের স্থানীয় বাজার গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বাণিজ্যের প্রসার বাড়াতে দেশের ভেতরে ও বাইরে নতুন নতুন বাজার সৃষ্টির তাগাদা দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ভাষণদানকালে এ তাগাদা দেন। খবর বাসস ও ইউএনবির।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেবল রপ্তানি নিয়ে চিন্তা করা যথাযথ হবে না। আমাদের স্থানীয় বাজার সৃষ্টি এবং জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ানোর ওপর নজর দিতে হবে। এটি হচ্ছে দেশের অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্যথায় অর্থনীতির ভিত শক্তিশালী হবে না।
সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়লে স্থানীয় বাজার গড়ে উঠবে—এ কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ইতিমধ্যে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। বিগত পাঁচ বছরে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদেক্ষেপের ফলে বর্তমান মাথাপিছু আয় এক হাজার ১৯৫ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের উৎপাদন ও ভোক্তার চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমদানি-রপ্তানি নীতি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রধান কাজ। এটা মনে রেখেই দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রেখে ভোক্তা অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ মুক্তবাজার অর্থনীতির নানা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে এবং পদক্ষেপ নিতে হবে আর্থ-সামাজিক বাস্তবতার নিরিখে। এর মধ্যে জনগণের চাহিদা, বিশ্ববাজারে এবং বিদেশে চাহিদার ভিত্তিতে পণ্য উৎপাদনের বিষয়ে বিশেষভাবে বিবেচনায় নিতে হবে।
ভেজাল খাদ্যের পাশাপাশি ফরমালিনমুক্ত খাবারের বিক্রি ও ব্যবহার সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার আধুনিকায়নের মাধ্যমে বিএসটিআইয়ের মানোন্নয়ন করেছে। এর সঙ্গে ভেজাল খাদ্যবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে। তবে ফরমালিন সম্পর্কে ব্যাপক জনসচেনতা সৃষ্টির প্রয়োজন রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক বাজারে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে চায়ের পাশাপাশি মৎস্য, মাংস ও শাক-সবজির ব্যাপক চাহিদার কথা উল্লেখ করে বলেন, এসব পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধি করা গেলে দেশে শুধু বৈদেশিক মুদ্রার আয় হবে না, দেশ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে।
প্রধানমন্ত্রী আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে বাণিজ্য বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে মধ্যপ্রাচ্য ও উপসাগরীয় দেশগুলোয় আমাদের বাজার খুঁজে বের করতে হবে। তিনি বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে সীমান্ত বাজারের সংখ্যা বাড়ানোর পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, এতে বাংলাদেশ অধিক লাভবান হবে।