বাক্সবন্দী একদশক

ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালের বারান্দায় দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় ধরে পড়ে আছে বিদেশ থেকে আমদানি করা পাঁচটি স্টিম স্টেরিলাইজার ও অটোক্লেভ যন্ত্রের বাক্স। যন্ত্রপাতি জীবাণুমুক্ত করার এসব যন্ত্রের বাক্স একবারও খোলা হয়নি।

এদিকে হাসপাতালের জন্য ১৯৯৭ সালে একটি এবং ২০১০ সালে আরও একটি শক্তিশালী জেনারেটর সরবরাহ করা হয়। কিন্তু জেনারেটরের জন্য তেল বরাদ্দ না থাকায় সেগুলো কোনো দিন চালানো সম্ভব হয়নি।

হাসপাতাল কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০০৩ সালের ২৫ জুন ঢাকার কেন্দ্রীয় ভান্ডার থেকে তিনটি স্টিম স্টেরিলাইজার যন্ত্র, ২০০২ সালের ৮ আগস্ট একটি অটোক্লেভ যন্ত্র এবং ২০০৬ সালের ২১ মার্চ আরও একটি অটোক্লেভ যন্ত্র ফেনী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ যন্ত্রগুলো স্থাপনের জন্য হাসপাতালে আলাদা কোনো কক্ষ নেই। তা ছাড়া এসব যন্ত্রের বাক্সগুলো আকারে এত বড় যে সাধারণ দরজা দিয়ে কোনো কক্ষেই এগুলো ঢোকানো সম্ভব নয়। ফলে ঢাকার কেন্দ্রীয় ভান্ডারের ঠিকাদারের লোকজন যেভাবে হাসপাতালের বারান্দায় বাক্সগুলো রেখে গেছেন, এখনো সেভাবেই পড়ে আছে। বাক্সগুলো একবারও খুলে দেখা হয়নি। সূত্র জানায়, যন্ত্রগুলোর মূল্য আনুমানিক এক কোটি টাকা।

সূত্র জানায়, ২০০৬ সালে ফেনীর মহিপালে নির্মিত ট্রমা সেন্টারের জন্যও একটি অটোক্লেভ যন্ত্র পাঠানো হয়। কিন্তু সেই যন্ত্রের বাক্সটিও এখন পর্যন্ত খোলা হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চিকিৎসা কর্মকর্তা বলেন, বিদ্যুৎ না থাকলে ছোট একটি জেনারেটরের সাহায্যে জরুরি অস্ত্রোপচার করা হয়। কোনো কারণে জেনারেটরটি নষ্ট হলে জরুরি অস্ত্রোপচারের রোগীদের কষ্টের সীমা থাকে না।

ফেনী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) অসীম কুমার সাহা বলেন, স্টিম স্টেরিলাইজার ও অটোক্লেভ যন্ত্রগুলো স্থাপনের জন্য হাসপাতাল ভবনে কক্ষ ও আনুষঙ্গিক ব্যবস্থা না থাকায় সেগুলো স্থাপন করা যায়নি। আর জেনারেটর চালানোর জন্য কর্তৃপক্ষ তেলের বরাদ্দ দেয়নি। এতে দীর্ঘদিন অব্যবহূত থেকে জেনারেটরগুলো নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। তিনি জানান, ২০১০ সালের ২৫ অক্টোবর হাসপাতালের তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক মোহামঞ্চদ ইব্রাহিম এসব যন্ত্র ফেরত নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একটি চিঠি লেখেন।