চুয়াডাঙ্গায় মহাসড়কে একের পর এক ডাকাতি, ছিনতাই

চুয়াডাঙ্গার সড়ক-মহাসড়কগুলোতে একের পর এক ডাকাতি ও ছিনতাই বেড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। এতে সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের যাত্রী ও পরিবহন মালিক-শ্রমিকেরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৩ সেপ্টেম্বর চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর মহাসড়কে সদর উপজেলার আলোকদিয়া কানাপুকুর এলাকায় গাছ ফেলে রাত ১২টা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত গণডাকাতি হয়।ডাকাতেরা তখন ঢাকা থেকে মেহেরপুরগামী রয়েল এক্সপ্রেস ও চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্সের যাত্রীদের অস্ত্র দেখিয়ে জিম্মি করে মুঠোফোন, টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে। এ সময় চুয়াডাঙ্গা থেকে আলমডাঙ্গা উপজেলার ভালাইপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে যাওয়ার সময় আকালেহোসেন নামের এক মোটরসাইকেল আরোহী ডাকাতদের কবলে পড়েন। তিনি বলেন, ডাকাতেরা তাঁর মোটরসাইকেলও ছিনিয়ে নেয়।

দামুড়হুদা উপজেলার পারকৃষ্ণপুর মদনা ইউনিয়নের মদনা গ্রামের গরুর ব্যাপারী সেলিমুদ্দিন ও সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের সড়াবাড়িয়া গ্রামের নাছির উদ্দিন বলেন, ২৫ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে চুয়াডাঙ্গা-যশোর মহাসড়কে জীবননগর উপজেলার জামতলায় ঢাকা থেকে দর্শনা অভিমুখী জে আর পরিবহনের একটি নৈশকোচ, গরুর ব্যাপারী বহনকারী ট্রাক ও যাত্রীবাহী করিমন ডাকাত দলের কবলে পড়ে। তাঁরা দুজন ওই ট্রাকে ছিলেন। খবর পেয়ে বেগমপুর ক্যাম্পের পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে ডাকাতেরা পালিয়ে যায়।

স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৮ সেপ্টেম্বর আলমডাঙ্গার জামজামি-রামদিয়া সড়ক, ১৯ সেপ্টেম্বর দামুড়হুদার দুর্গাপুর-সদাবরি সড়ক, ২৪ সেপ্টেম্বর চুয়াডাঙ্গা-যশোর মহাসড়কের জীবননগরের উথলী আমতলায়, ২৭ ও ২৮ সেপ্টেম্বর আলমডাঙ্গার নওদাপাড়া এবং ৩০ সেপ্টেম্বর চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ মহাসড়কে সদর উপজেলার ভুলটিয়ায় ট্রাক, নৈশকোচ, পথচারী, অটোরিকশাচালকেরা ডাকাতির শিকার হন। প্রতিটি ঘটনাই ঘটেছে সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাতে। বাড়তি ঝামেলা এড়াতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগী লোকজন পুলিশের কাছে যাননি। 

চুয়াডাঙ্গা জেলা বাস-মিনিবাস মালিক গ্রুপের সভাপতি ও রয়েল এক্সপ্রেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সালাউদ্দিন বলেন, ‘সড়কে একের পর এক ডাকাতির ঘটনায় পুলিশের ভূমিকায় পরিবহন মালিকেরা হতাশ। অতীতে এ ধরনের ঘটনায় অভিযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি। তাই এখন আর অভিযোগ করি না।’

পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সমন্বয়হীনতা এবং সচেতনতার অভাবকে দায়ী করেছেন। গত বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের বলা আছে, রাতে চলাচলের সময় তাঁরা যেন সড়কের নিকটতম পুলিশ ক্যাম্প ও টহল দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। অথচ, তাঁরা তা করেন না। তবে পুলিশ ডাকাতির সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকজনকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করেছে।