হিজবুত তওহিদের মুখপত্র দেশের পত্র বন্ধের নির্দেশনা

ধর্মভিত্তিক সংগঠন হিজবুত তওহিদের মুখপত্র দৈনিক দেশের পত্র পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধের ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
একই সঙ্গে এই সংগঠন বা পত্রিকাটি আয়োজিত সভা-সমাবেশে সরকারি দলের নেতা, মন্ত্রী, সাংসদ ও সরকারি কর্মকর্তারা যাতে অংশ না নেন, সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে অনুরোধ করার কথা বলা হয়েছে।
২২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ নির্দেশনা পাঠানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে গতকাল মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হিজবুত তওহিদের মুখপত্র দেশের পত্র-এর প্রকাশনা বাতিলে উদ্যোগী হতে সংশ্লিষ্ট শাখাকে নির্দেশ দেয় বলে জানা গেছে। তাতে সংগঠনটির প্রচারপত্র পাওয়া মাত্র জব্দ করার জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীরের পাঠানো এ-বিষয়ক চিঠিতে বলা হয়েছে, হিজবুত তওহিদ নতুন কৌশল নিয়ে মাঠে নেমেছে। ২০০৯ সালে এ সংগঠনটিকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। অন্যান্য ইসলামিক ও ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোকে ভ্রান্ত ধারণায় পরিচালিত এবং নিজেদের সঠিক পথের অনুসারী আখ্যা দিয়ে হিজবুত তওহিদ গঠন করা হয়। বর্তমানে সংগঠনটি ৪১ জেলায় তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। টাঙ্গাইল জেলার করোটিয়া গ্রামের বায়েজিদ খান পন্নী এ দলটি গঠন করলেও বর্তমানে মোহাম্মদ সেলিম নামের এক ব্যক্তি দলের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে হুমায়ুন খান পন্নীর মেয়ে শাহানা পন্নী যোগ দিচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিঠিতে বলা হয়, দৈনিক দেশের পত্র ও দৈনিক বজ্র শক্তি নামে দুটি পত্রিকার সক্রিয় সহযোগিতায় হিজবুত তওহিদ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়মিতভাবে সভা, সম্মেলন, সুধী সমাবেশ, প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করছে। এসব অনুষ্ঠানে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় লোকজন, আওয়ামী লীগের নেতা এবং সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আমন্ত্রণ জানিয়ে হিজবুত তওহিদের সদস্যদের নিরাপদে জনসমক্ষে আনার কৌশল নিয়েছে দলটি, যার মাধ্যমে দলটি ভেতরে ভেতরে নিজেদের সুসংগঠিত করছে।
ওই চিঠিতে বলা হয়, গত কয়েক মাসে ঢাকা, সিলেট, বগুড়া, কক্সবাজার, সাতক্ষীরা, খুলনা, সাভার, সুনামগঞ্জ, বরিশাল, চট্টগ্রাম, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, বাগেরহাট, খুলনা, মুন্সিগঞ্জ, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, কিশোরগঞ্জ, নোয়াখালীসহ বিভিন্ন জেলায় সভা-সেমিনার করেছে।
প্রসঙ্গত, গত ২১ আগস্ট রাজধানীতে শিল্পকলা একাডেমীর মিলনায়তনে হিজবুত তওহিদের এমন এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। ওই অনুষ্ঠানে বড় পর্দায় প্রদর্শিত তথ্যচিত্রে দেখা যায়, এর আগেও হিজবুতের এক অনুষ্ঠানে শাজাহান খান প্রধান অতিথি এবং রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক বিশেষ অতিথি ছিলেন।