সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার উন্নয়ন ছাড়া গণতন্ত্র টেকসই হবে না

রাজধানীতে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, দেশে জাতিগত, ধর্মীয়, যৌনসহ সব ধরনের সংখ্যালঘু নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন ছাড়া টেকসই গণতন্ত্র হবে না। সংখ্যালঘুদের অধিকার প্রতিষ্ঠাকে সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করতে হবে।
গতকাল সোমবার ডেইলি স্টার ভবনের তৌফিক আজিজ খান সেমিনার হলে এ সেমিনারের আয়োজন করে হিউম্যান রাইটস অ্যালায়েন্স বাংলাদেশ (এইচআরএবি। ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘু জনগণের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক এ সেমিনারের মাধ্যমে ১৪টি মানবাধিকার সংগঠনের জোট এইচআরএবির যাত্রা শুরু হলো। তারা আদিবাসী, ধর্মীয়, যৌন সংখ্যালঘুদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় একত্রে কাজ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।
লেখক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, রাষ্ট্র যখন নিজেই সাম্প্রদায়িকতার পৃষ্ঠপোষকতা করে, তখন তা ঠেকানো কঠিন হয়ে পড়ে। দেশে রাজনীতির যে চর্চা এখন চলছে, তা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তিনি সংখ্যালঘুদের বিষয় দেখাশোনার জন্য উপজেলা পর্যায়ে একজন তদারকি কর্মকর্তা এবং সরকারের নীতিনির্ধারণ পর্যায়ে সংখ্যালঘুদের অংশগ্রহণ রাখার প্রস্তাব করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুকমল বড়ুয়া বলেন, মূলত ভূমিকে কেন্দ্র করে আদিবাসীরা, বিশেষ করে আদিবাসী নারীরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। রাষ্ট্রের নাগরিকদের সংখ্যাতত্ত্ব দিয়ে বিচার করা ঠিক নয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, রাষ্ট্রকে কেবল ধর্মনিরপেক্ষ হলে চলবে না; লিঙ্গ, জাতি, ভাষানিরপেক্ষ হতে হবে। তিনি বলেন, অনেক যৌন সংখ্যালঘুদের কথা এখনো আমাদের সমাজে বলা যায় না।
বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্যপরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশ গুপ্ত একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচের (বিডিএমডব্লিউ) সভাপতি রবীন্দ্র ঘোষের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন দৈনিক আমাদের অর্থনীতি সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক শক্তিপদ ত্রিপুরা প্রমুখ।
সেমিনারে আদিবাসী, যৌন সংখ্যালঘু ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর তিনটি তথ্যচিত্র দেখায় কাপেং ফাউন্ডেশন, বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি (বিএসডব্লিউএস) ও বিডিএমডব্লিউ।