সেই বিকল্প 'হিমাগারের' উদ্বোধন

উদ্বোধনের পর বিকল্প ‘হিমাগার’ ঘুরে দেখছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান। গতকাল রাজশাহীতে l প্রথম আলো
উদ্বোধনের পর বিকল্প ‘হিমাগার’ ঘুরে দেখছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান। গতকাল রাজশাহীতে l প্রথম আলো

রাজশাহীতে সেই বিকল্প ‘হিমাগার’ উদ্বোধন করলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান। গতকাল শুক্রবার সকালে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করেন। বিদ্যুৎ ছাড়াই চলবে এ হিমাগার।
বিকল্প হিমাগার নির্মাণকাজে লাগানো হয়েছে বাষ্পীভবনের একটি সাধারণ ধর্মকে। এর উদ্ভাবক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এম. মনজুর হোসেন। এর ত্রিমাত্রিক নকশা তৈরি করেছেন তাঁর মেয়ে তরুণ স্থপতি নাদিয়া মনজুর।
রাজশাহী নগরের চকপাড়ায় আকাফুজি গবেষণা নার্সারিতে এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সূচনা বক্তব্য দেন প্রকল্পের পরিচালক অধ্যাপক এম. মনজুর হোসেন। তিনি ব্যাখ্যা করেন, গাছ শিকড়ের মাধ্যমে পানি তুলে পাতার মাধ্যমে বাষ্পীভবন প্রক্রিয়ায় নিজেকে ঠান্ডা রাখে। এ জন্য গাছের পাতা খরতাপের ভেতরেও ঠান্ডা থাকে। এই প্রাকৃতিক প্রযুক্তিকে এই সংরক্ষণাগার তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে।
উদ্বোধনকালে গভর্নর বলেন, প্রকৃতির দান আর মানুষের জ্ঞানের সমন্বয় হচ্ছে এই অনবদ্য সৃষ্টি। প্রকৃতি থেকে পাঠ নিয়ে তাতে বিজ্ঞানের ধারণা সম্পৃক্ত করলে কতটা সমৃদ্ধ হওয়া যায়, এটা তারই উদাহরণ। তিনি বলেন, এতে বিদ্যুৎ নয়, প্রকৃতির বাতাসকে কাজে লাগানো হয়েছে। এখানে যে কয়টি ফ্যান লাগবে তা-ও চলবে সৌরশক্তির মাধ্যমে। একে হিমাগার না বলে প্রাকৃতিক সংরক্ষণাগার বলাই ভালো। ৩০০ টন ধারণক্ষমতার এই হিমাগারটি তৈরিতে ব্যয় হয়েছে মাত্র ১৪ লাখ টাকা। বাংলাদেশে এ ধরনের শস্য সংরক্ষণাগার এটিই প্রথম।
সদ্য নির্মিত এই প্রাকৃতিক সংরক্ষণাগারের নামকরণ করা হয়েছে সাবেক সাংসদ ও মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত শাহ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর নামে।
বাংলাদেশ ব্যাংক-রাজশাহীর নির্বাহী পরিচালক জিন্নাতুল বাকেয়া অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্য চৌধুরী সারোয়ার জাহান, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম ওসমান গনি, রাজশাহী জেলা প্রশাসক মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, প্রকল্পের সভাপতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান এ কে এম রফিউল ইসলাম ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মাহফুজুর রহমান।
গত ৯ নভেম্বর এই সংরক্ষণাগার নিয়ে প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ জন্য অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে প্রথম আলোর রাজশাহীর নিজস্ব প্রতিবেদক ও কারিগরি সহায়তা দেওয়ার জন্য জাপানি দুই বিজ্ঞানীকে শুভেচ্ছা উপহার দেওয়া হয়।