সাত রেলস্টেশন চালুর খবর নেই

প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর এক বছর পার হলেও জনবলের অভাবে কালুখালী-ভাটিয়াপাড়া রেলপথের সাতটি রেলস্টেশন চালু হয়নি। এ কারণে এসব স্টেশনে ট্রেন না থামায় স্থানীয় বাসিন্দারা রেলপথ ব্যবহার করতে পারছেন না।
বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের আড়কান্দি গ্রামের বাসিন্দা শিমুল দাস বলেন, বহরপুর রেলস্টেশন থেকে মধুখালী রেলজংশনের দূরত্ব রেলপথে প্রায় ১৮ কিলোমিটার এবং সড়কপথে ৩৪ কিলোমিটার। বহরপুর-মধুখালী জংশনের মধ্যে দুটি রেলস্টেশন থাকলেও ট্রেন কোথায়ও থামে না। সুতরাং ট্রেন চললেও এই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের আশা পূরণ হলো না।
২০১৩ সালের ২ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজবাড়ীর পাংশায় এক জনসভায় কালুখালী-ভাটিয়াপাড়া রেলপথে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের দিন বিকেলে রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের কালুখালী থেকে গোপালগঞ্জের ভাটিয়াপাড়া গমনের মধ্য দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। এই রেলপথ ১৯৯৭ সালের ১৯ আগস্ট থেকে বন্ধ ছিল।
রাজবাড়ী রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয় ও রাজবাড়ী রেলস্টেশন মাস্টারের কার্যালয় সূত্র জানায়, কালুখালী থেকে ভাটিয়াপাড়া পর্যন্ত রেলপথের দূরত্ব ৮২ কিলোমিটার। এতে ১২টি রেলস্টেশন পুনঃস্থাপন করা হয়। এগুলো হলো রামদিয়া, বহরপুর, আড়কান্দি, নলিয়াগ্রাম, মধুখালী জংশন, সাতৈর, বোয়ালমারী, সহস্রাইল, বনমালী (কাজ অসম্পূর্ণ), বেসপুর, কাশিয়ানী ও ভাটিয়াপাড়া। এর মধ্যে শুধু বহরপুর, মধুখালী, বোয়ালমারী, কাশিয়ানী ও ভাটিয়াপাড়া রেলস্টেশন চালু রয়েছে। অন্যগুলোর অবকাঠামোর সব সুবিধা থাকা সত্ত্বেও জনবলের অভাবে চালু করা সম্ভব হয়নি। কালুখালী থেকে ভাটিয়াপাড়া পর্যন্ত স্টেশনের বিভিন্ন দপ্তরে মোট ৩২৫টি পদের বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৫৫ জন।
রাজবাড়ী রেলস্টেশনের স্টেশনমাস্টার হযরত আলী জানান, নতুন চালু হওয়া রেলপথে লোকাল ট্রেন প্রয়োজন। কিন্তু জনবলের অভাবে অবকাঠামোগত সুবিধা থাকা সত্ত্বেও চালু করা যাচ্ছে না।
রাজবাড়ী রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী সুলতান আলী জানান, জনবল নিয়োগ না দেওয়ায় রেলস্টেশন চালু করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবহিত আছে।
ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলীর (পথ) দপ্তর সূত্র জানায়, এই রেলপথের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১১২টি পদ রয়েছে। এখানে জনবল পদ ফাঁকা রয়েছে ৯১টি।
রাজবাড়ী রেলস্টেশনের স্টেশনমাস্টারের কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্র জানায়, এই রেলপথে কালুখালী-ভাটিয়াপাড়া এক্সপ্রেস নামে একটি আন্তনগর ট্রেন প্রতিদিন একবার যাতায়াত করে। ট্রেনটি রাজবাড়ী রেলস্টেশন থেকে সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে ছেড়ে বেলা সাড়ে ১১টায় কালুখালী পৌঁছায়। কালুখালী রেলস্টেশন (জংশন) থেকে দুপুর পৌনে ১২টায় ছেড়ে বেলা সোয়া একটায় গোপালগঞ্জের ভাটিয়াপাড়ায় পৌঁছায়। আবার ভাটিয়াপাড়া থেকে পৌনে দুইটায় ছেড়ে রাজবাড়ী রেলস্টেশন হয়ে বিকেল সোয়া পাঁচটায় গোয়ালন্দে পৌঁছায়।