অস্ত্র ব্যবসার তথ্য দুদককে দেননি মুসা বিন শমসের

মুসা বিন শমসের। ফাইল ছবি
মুসা বিন শমসের। ফাইল ছবি

বিতর্কিত ব্যবসায়ী মুসা বিন শমসের তাঁর অস্ত্র ব্যবসার কোনো তথ্যই দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) দেননি। ব্যবসার গোপনীয়তা রক্ষার জন্যই তথ্য দিতে চাননি। দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে এসব প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গেছেন তিনি।
আজ বুধবার নিজের কার্যালয়ে দুদক কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিন সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
১৮ ডিসেম্বর দুদকে মুসা বিন শমসেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সংস্থার উপপরিচালক মীর জয়নুল আবেদীন শিবলী। ওই দিন দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন, সুইস ব্যাংকে তাঁর সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৫১ হাজার কোটি টাকা) আটকে আছে। এ বিপুল পরিমাণ টাকা বাংলাদেশ থেকে পাচার করা নয় বলে দাবি করেন তিনি।
অবৈধ সম্পদ ও অর্থ পাচারের অভিযোগের বিষয়ে মুসা সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রতিটি গল্পের পেছনে একটি ইতিহাস থাকে, ধৈর্য ধরেন, সব জানতে পারবেন। আমার সম্পর্কে বলা হয়েছে, আমি ৫১ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছি। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। কিন্তু এই পরিমাণ টাকা বাংলাদেশ থেকে অর্জন করা সম্ভব নয়, যা উপার্জন করেছি বিদেশেই।’
গত ৩ নভেম্বর কমিশনের নিয়মিত বৈঠকে মুসার সম্পদ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়ে মীর জয়নুল আবেদীন শিবলীকে অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে নোটিশ দেওয়া হয় তাঁকে।
দুদক কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘দুদকের কাছে তিনি সুইস ব্যাংকে আটকে থাকা ৫১ হাজার কোটি টাকার কথা স্বীকার করেছেন। তবে এ অর্থ তিনি বিদেশে অস্ত্র ব্যবসা করে অর্জন করেছেন বলে দাবি করেন। তার অস্ত্রের ব্যবসা ছিল, এখনো রয়েছে।’
কমিশনার বলেন, মুসা তাঁর আয়-ব্যয়ের হিসাব ঠিকমতো দুদকের কাছে উপস্থাপন করতে পারেননি। পরবর্তী সময়ে এসব হিসাব আরও ভালো করে নেওয়ার জন্য তাঁকে আবারও তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
চলতি বছরের জুন মাসে বিজনেস এশিয়া নামের একটি সাময়িকীর ঈদসংখ্যায় মুসাকে নিয়ে প্রকাশিত প্রচ্ছদ প্রতিবেদনের সূত্র ধরে তাঁর সম্পদ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। ওই সাময়িকীতে এই ব্যবসায়ীর সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তাঁর জীবনযাত্রা, আর্থিক সামর্থ্য ইত্যাদি বিষয় উল্লেখ করা হয়।
১৯৪৫ সালের ১৫ অক্টোবর ফরিদপুরে জন্ম নেওয়া মুসা ড্যাটকো গ্রুপের মাধ্যমে জনশক্তি রপ্তানি করেন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে তাঁকে বাংলাদেশে ‘জনশক্তি রপ্তানির জনক’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
১৯৯৭ সালে যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে টনি ব্লেয়ারের নির্বাচনী প্রচারের জন্য ৫০ লাখ পাউন্ড অনুদান দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে বেশ আলোচনায় আসেন এ ব্যবসায়ী। বিজনেস এশিয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অস্ত্র ব্যবসা, তেল বাণিজ্য ও কেনা-বেচার মধ্যস্থতার মাধ্যমে বিপুল সম্পদের অধিকারী হয়েছেন মুসা।