নাটোরে ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা, গঠনতন্ত্র না মানার অভিযোগ

দীর্ঘদিন পর গতকাল শনিবার বিকেলে সম্মেলন ছাড়াই সমঝোতা করে নাটোর সদর উপজেলা কমিটি, পৌর কমিটি ও নবাব সিরাজ উদ দৌলা সরকারি কলেজ (এনএস) ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সদর উপজেলা কমিটিতে সভাপতি পদে নিয়ন হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সোহানুর রহমানের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। একইভাবে নবাব সিরাজ উদ দৌলা সরকারি কলেজের সভাপতি সাহাদৎ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক রিয়ন হোসেন এবং পৌর ছাত্রলীগের কমিটিতে সভাপতি রাকিবুল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক পদে আবদুল্লাহ আল কাফিকে মনোনীত করা হয়। 

দলীয় সূত্র জানায়, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বৃন্দাবন প্রামাণিকের সভাপতিত্বে দুপুরে শহরের একটি দৈনিক পত্রিকার অফিস চত্বরে ছাত্রলীগের সাবেক কয়েকজন নেতা নতুন কমিটি গঠনের জন্য সভায় মিলিত হন। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নাটোর-২ (সদর) আসনের সাংসদ শফিকুল ইসলাম। পরে আলোচনা করে ছাত্রলীগের এসব নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুল্লাহ আল সাকিব জানান, গঠনতন্ত্রের তোয়াক্কা না করে যেনতেনভাবে এসব কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপজেলা কমিটি গঠনের আগে ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়নি। সেখান থেকে কোনো কাউন্সিলরও নির্বাচন করা হয়নি। পৌর কমিটি গঠনের ক্ষেত্রেও আগে ওয়ার্ড কমিটি গঠন করার বিধান রয়েছে। কিন্তু তা না করেই সদর উপজেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। একইভাবে এন এস কলেজের কমিটি গঠনের আগে প্রত্যেক বিভাগের কমিটি গঠন করা হয়নি। নুতন কমিটিতে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের কারও কারও ছাত্রত্ব অনেক আগেই শেষ হয়েছে। কেউ কেউ ছাত্ররাজনীতিতে একেবারে অচেনা। কারও কারও বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও মাদকসেবনের অভিযোগ রয়েছে। সাকিব দাবি করেন, ‘৩১ ডিসেম্বর জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন। সেখানে  আওয়ামী লীগের কিছু নেতার পছন্দের ছেলেদের নেতা নির্বাচনের জন্য তড়িঘড়ি করে এসব কমিটি গঠন করা হয়েছে।’

এন এস কলেজ ছাত্রলীগের সর্বশেষ সভাপতি বুলবুল আহমেদ তড়িঘড়ি করে নতুন কমিটি করার অভিযোগ করে বলেন, ‘কলেজের নতুন কমিটিতে যাঁরা এসেছেন, তাঁরা ছাত্ররাজনীতিতে একেবারে অচেনা। যাঁরা সক্রিয় ও ত্যাগী নেতা তাঁদের নেতা নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ না দিয়েই সম্মেলন ছাড়া তড়িঘড়ি কমিটি করা হয়েছে।’

তবে জেলা ছাত্রলীগের সর্বশেষ সাধারণ সম্পাদক শফিউল আজম ওই নেতাদের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘তিন থেকে চার বছর আগে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠনের ঘোষণা দেওয়ায় উপজেলা, পৌর ও কলেজ কমিটি বিলুপ্ত হয়েছে। ফলে এসব কমিটিতে কার্যকর কোনো নেতা ছিলেন না। একই কারণে নতুন করে প্রস্তুতি কমিটি গঠন ও ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও কলেজের বিভাগ পর্যায়ে আহ্বায়ক বা নতুন কমিটি গঠন করা যায়নি। তাই ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা স্থানীয় সাংসদের সঙ্গে বসে সমঝোতার ভিত্তিতে নতুন কমিটি গঠন করেছেন। এতে দলের মধ্যে গতি আসবে।’ তিনি অবশ্য জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন উপলক্ষে তড়িঘড়ি করে কমিটি গঠনের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘এটা করা ছাড়া কোন উপায় ছিল না।’

নতুন কমিটি গঠনের ব্যাপারে স্থানীয় সাংসদের প্রতিক্রিয়া জানার জন্য শনিবার সন্ধ্যায় ছয়-সাতবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।