বিভাগ সেরা বগুড়ার ছয় প্রতিষ্ঠান

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার ফলাফলেও রাজশাহী বিভাগের মধ্যে বগুড়ার সেরা প্রতিষ্ঠানগুলোর জয়জয়কার। রাজশাহী বিভাগের সেরা দশের তালিকায় এবার বগুড়ার ছয়টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
গত বছরের তুলনায় জেলায় কমেছে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা। গত বছর বগুড়া জেলায় ৫ হাজার ৯৪৭ জন জিপিএ-৫ পেলেও এবার পেয়েছে ৫ হাজার ৬১২ জন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী, অন্যবারের মতো এবারও বগুড়া শহরের নামকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সমাপনী পরীক্ষায় ভালো করেছে। শহরের প্রতিষ্ঠানগুলোতে অন্যবারের চেয়ে বেড়েছে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাও।
বগুড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুস সালাম প্রথম আলোকে বলেন, সমাপনী পরীক্ষায় রাজশাহী বিভাগে সেরা দশের মধ্যে বগুড়া বিয়াম মডেল স্কুল ও কলেজ প্রথম, বগুড়া জিলা স্কুল তৃতীয়, বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় চতুর্থ, বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ পঞ্চম, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ ষষ্ঠ এবং বগুড়া পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজ দশম অবস্থানে রয়েছে।
বিভাগ সেরা বগুড়া বিয়াম মডেল স্কুল ও কলেজ থেকে এবার ৩৬৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩১৯ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। গত বছর এ বিদ্যালয় থেকে ২৯৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ২৩৯ জন জিপিএ-৫ পায়। ২০১২ সালে পেয়েছিল ১৯৯ জন।
প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ মুহা. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিভাগ সেরা হওয়ার সাফল্যের এ ধারা আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে।
বগুড়া জিলা স্কুল থেকে ২৪৬ শিক্ষার্থী সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ২৪২ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। গত বছর এ বিদ্যালয় থেকে ২৪০ জন এবং ২০১২ সালে ২২৯ জন জিপিএ-৫ পেয়েছিল।
জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক রমজান আলী বলেন, ‘প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে এখনো মুঠোফোন যায়নি। ফলে তারা মন দিয়ে পড়াশোনা করছে। এ জন্য প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখা সম্ভব হচ্ছে। বাচ্চারা মুঠোফোনে ফেসবুক ও ইন্টারনেটে সময় অপচয় না করলে সাফল্যের এ ধারা অব্যাহত থাকবে।’
বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এবার ২৫২ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ২৪৫ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। গত বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২৫৪ জন। ২০১২ সালে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২২৫ জন।
বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন বলেন, ‘অনেক আগেই বিভাগ সেরা হওয়ার সাফল্য পেয়েছি, এখন আমরা দেশসেরা হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছি।’
রাজশাহী বিভাগে পঞ্চম অবস্থানে থাকা বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ থেকে এবার ২৫৯ জন পরীক্ষা দিয়ে ২১৯ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। গত বছর ২৬৯ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৫০ জন জিপিএ-৫ পায়। ২০১২ সালে জিপিএ-৫ পায় ২০৩ জন।
বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ কর্নেল মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেশসেরা হওয়ার জন্য নয়, বিগত দিনের সাফল্যের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতেই আমরা ভবিষ্যতে আরও ভালো ফল অর্জনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।’
বিভাগে ষষ্ঠ অবস্থানে থাকা বগুড়া আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবার ২৪২ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ১৯৯ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। গত বছর এ বিদ্যালয় থেকে ১৮৯ জন এবং ২০১২ সালে ২০৯ জন জিপিএ-৫ পেয়েছিল। প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ তফাজ্জল হোসেন বলেন, সাফল্যের এই ধারা আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে।
বগুড়া পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবার ২৭৪ শিক্ষার্থীর মধ্যে শতভাগ পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৯২ জন। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ শাহাদৎ আলম বলেন, শিক্ষাঙ্গনে সুশৃঙ্খল পরিবেশ নিশ্চিত করার পাশাপাশি শিক্ষকদের জবাবদিহি ও পাঠদানে আন্তরিকতার কারণেই এ সাফল্য অর্জন সম্ভব হয়েছে।