ফেনীতে বিচারপতির বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

হাইকোর্টের বিচারপতি কাজী রেজা-উল হকের গ্রামের বাড়িতে গত বুধবার রাতে দুর্বৃত্তরা অগ্নিসংযোগ করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আগুনে ফেনী সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের ওই বাড়িটির রান্নাঘরের অংশবিশেষ পুড়ে গেছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশের ধারণা, পলাতক অবস্থায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিবৃতি গণমাধ্যমে প্রকাশের ওপর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার জেরেই এই অগ্নিসংযোগ করা হয়। বুধবার বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চ ওই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদপুর গ্রামের একজন মুদি দোকানি গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বিচারপতির বাড়ির পাশ দিয়ে বাজারে যাওয়ার সময় পোড়া দাগ দেখতে পান। পরে তিনি বিষয়টি অন্যদের জানান। খবর পেয়ে ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাইফুল হক, সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব মোরশেদ বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ২০-২৫ বছরের পুরোনো একটি আধা পাকা বড় ঘর। সামনের অংশে লাগোয়া রান্নাঘর। রান্নাঘরের পূর্ব পাশের কিছু অংশ আগুনে পুড়ে গেছে। এ ছাড়া ঘরটির তিনটি জানালা ভাঙা দেখা গেছে। ঘরের ভেতর কেরোসিনের গন্ধ পাওয়া গেছে।
গ্রামের একাধিক বাসিন্দা বলেন, তাঁদের ধারণা, দুর্বৃত্তরা ভোরে ঘরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়। কিন্তু রাতে প্রচুর কুয়াশা পড়ার কারণে দালান ও টিন ভেজা ছিল। এ কারণে আগুন ঠিকমতো জ্বলেনি, আপনা-আপনি নিভে যায়।
বিচারপতি কাজী রেজাউল হকের চাচাতো ভাই কাজী মেহেদী মাহমুদ প্রথম আলোকে জানান, বিচারপতি গ্রামে এলে দুই-তিন দিন এই বাড়িতে থাকেন। এ ছাড়া প্রায় সারা বছর বাড়িটি তালাবদ্ধ থাকে।
সদর থানার ওসি মাহবুব মোরশেদ গতকাল পাঁচটার দিকে প্রথম আলোকে জানান, আটক করা ওই ব্যক্তির নাম নিজাম উদ্দিন পাটোয়ারী। তাঁর বাড়ি ওই গ্রামেই। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
আইনজীবী সমিতির প্রতিবাদ: বিচারপতি কাজী রেজা-উল হকের বাসভবনে অগ্নিসংযোগের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। গতকাল বার ভবনের হলরুমে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আমীর-উল ইসলাম। সভায় বক্তারা বলেন, বিচারপতির বাসায় এ ধরনের হামলা রাষ্ট্রের ওপর আঘাত, যা কোনো অবস্থাতেই ক্ষমার যোগ্য নয়। ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ও মদদদাতাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানানো হয় প্রতিবাদ সভায়। সভায় বক্তব্য দেন ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, খান টিপু সুলতান, মাহবুব আলী প্রমুখ।