সংলাপের উদ্যোগ নিতে রাষ্ট্রপতিকে আহ্বান

রাষ্ট্রপতিকে একটি অর্থবহ সংলাপের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বেসরকারি সংস্থা সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)। সংস্থাটি আশা করে, রাষ্ট্রপতি এ ব্যাপারে যথাযথ প্রজ্ঞা ও সাহসিকতার পরিচয় দেবেন।
গতকাল শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানানো হয়। তবে সুজন মনে করে, সংকট সমাধানে রাজনীতিবিদদের সবার আগে ভূমিকা নেওয়া উচিত ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে ‘সংলাপ ও সমঝোতা আজ জরুরি’ শীর্ষক লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। লিখিত বক্তব্যে বর্তমান পরিস্থিতিতে সংকট সমাধানে রাষ্ট্রপতির জন্য রাষ্ট্র ও সমাজ বিষয়ে কয়েকটি লাতিন উক্তি তুলে ধরে বলা হয়, যুগে যুগে বিচারকদের জন্য আলোকবর্তিকা হিসেবে উক্তিগুলো কাজ করেছে। উক্তিগুলো হলো ‘যা আইনসিদ্ধ নয়, প্রয়োজনে তা আইনসিদ্ধ হয়’, ‘জনগণের নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ আইন’, ‘রাষ্ট্রের নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ আইন’। বক্তব্যে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের প্রধান ব্যক্তি। তার ‘সুপিরিয়র রেসপন্সিবিলিটি’ বা আরও বড় দায়িত্ব আছে।
লিখিত বক্তব্যে সুজন বলেছে, অতীতে বাংলাদেশ সংকটে পড়েছে। রাজনীতিবিদেরা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সেই সংকট থেকে বেরিয়ে এসেছেন। তাই এখনই রাজনীতিবিদদের সংলাপে বসতে হবে। তবে এ দেশের মানুষ আর কোনো ‘সংলাপ-সংলাপ খেলা’ দেখতে চায় না।
সুজন মনে করে, ৫ জানুয়ারি একটি প্রতিনিধিত্বশীল নির্বাচন না হওয়াই সংকটের কারণ। তাই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হওয়া জরুরি। তা না হলে দেশ চরম অনিশ্চয়তার দিকে ধাবিত হবে। সংস্থাটি মনে করে, সংবিধান লঙ্ঘন ও মৌলিক অধিকার হরণ করে সরকার ক্ষমতায় টিকে আছে। তারা ক্রমাগতভাবে বল প্রয়োগ করে যাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশ কর্তৃত্ববাদী পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হবে। আর কতৃর্ত্ববাদই উগ্রবাদের জনক।
লিখিত বক্তব্যে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে রাখাকে মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনে সরকারের নতুন মাত্রা বলে উল্লেখ করা হয়। বক্তব্যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকাজ দ্রুত শেষ করা, আন্দোলনের নামে যারা সহিংস ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত তাদের খুঁজে বের করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়। সংস্থাটি রাজনৈতিক সংস্কৃতির অধঃপতনে উদ্বেগ প্রকাশ করে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বদিউল আলম বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বেআইনি নয়। তবে এটা অনৈতিক বলা যায়। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গণমাধ্যমের ওপর যে ধরনের খড়্গ চলছে, তা এখনই বন্ধ করা দরকার।
সুজনের নির্বাহী সদস্য ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক তোফায়েল আহমেদ এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, একদলীয় বা ব্যক্তিশাসনের কারণে মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের উত্থান হয়। বাংলাদেশে এই সমস্যা ছিল না। কিন্তু এখন তা সৃষ্টি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, নাগরিক চোখ বন্ধ বা মুখ বন্ধ করে রাখার সুযোগ নেই। নীরবতা ভাঙতে হবে।