রাজশাহী ও চট্টগ্রামে দুটি ক্রীড়া স্কুল হচ্ছে

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ১৮ হাজার ৪০৪ কোটি টাকা ব্যয়ে পাঁচটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে চারটি নতুন এবং একটি সংশোধিত। রাজশাহী ও চট্টগ্রামে দুটি ক্রীড়া স্কুল প্রতিষ্ঠা করবে সরকার। এসব প্রকল্প ব্যয়ের ১৪ হাজার ২১২ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকার এবং বাকি অর্থ ৪ হাজার ১৯২ কোটি টাকা প্রকল্প সাহায্য থেকে সংস্থান করা হবে। 

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসির সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। একনেক সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের সামনে একনেকের প্রকল্পগুলোর বিস্তারিত তুলে ধরেন। খবর বাসসের।
একনেকে রাজশাহী ও চট্টগ্রামে আধুনিক প্রশিক্ষণ সুবিধাসহ দুটি ক্রীড়া স্কুল প্রতিষ্ঠার প্রকল্প অনুমোদন পায়। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ৭৯ কোটি টাকায় বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিকেএসপি এটি বাস্তবায়ন করবে। এর বাস্তবায়ন কাল ধরা হয়েছে ২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০১৭–এর জুন পর্যন্ত।
তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি প্রথম সংশোধিত প্রকল্প সম্পর্কে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘মূল অনুমোদিত প্রকল্পে উপবৃত্তি কর্মসূচি এবং শিক্ষার জন্য খাদ্য কর্মসূচিতে যথাক্রমে ৩ হাজার ৩৫১ কোটি ও ১ হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। কিন্তু এ দুটো কর্মসূচির জন্য আলাদা আলাদা প্রকল্প ইতিমধ্যে নেওয়া হয়েছে। এজন্যই সংশোধিত প্রকল্প থেকে এ দুটো কর্মসূচি বাদ দেওয়া হয়েছে। ফলে প্রকল্প ব্যয় কমে এসেছে।’ প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে ২০১৬–এর জুন থেকে এক বছর বাড়িয়ে ২০১৭–এর ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমান সরকার ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু করেছে। এসব বিদ্যালয়ের জন্য অতিরিক্ত একজন করে প্রি-প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ এ প্রকল্প থেকে করায় প্রকল্পে কিছুটা সংশোধনী আনা হয়। এ ছাড়াও জাতীয়করণকৃত এ ২৬ হাজারের ওপরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বাস্তবায়নে শ্রেণিপর্যায়ে ল্যাপটপ, সাউন্ড সিস্টেম ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর এই প্রকল্পের আওতায় সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত হয়। এসব কারণে প্রকল্প সংশোধন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রকল্পের মোট প্রকল্প সাহায্যের মধ্যে ২ হাজার ৬০৬ কোটি টাকা ঋণ এবং বাকি ১ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা অনুদান। এ ঋণ ও অনুদান দেবে ১০টি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা—এডিবি, আইডিএ, অস্ট্রেলিয়ান এইড, কানাডিয়ান সিডা, ডিএফআইডি, ইইউ, জাইকা, সুইডিস সিডা, জিপিই ও ইউনিসেফ। প্রকল্পটি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বাস্তবায়ন করছে।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীহল
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান–সংক্রান্ত নতুন তিনটি প্রকল্পেরও অনুমোদন দেওয়া হয়। রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ছাত্রীহল নির্মাণ করতে যাচ্ছে সরকার। এ জন্য বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্প নামক ৭৪ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয় একনেক। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ২০১৫–এর জানুয়ারি থেকে ২০১৮–এর জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। ১০০০ আসনের ছাত্রীহল, ড. ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা ইনস্টিটিউট স্থাপন এবং কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ এবং ইলেকট্রনিক্স ও টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে গবেষণা ল্যাবরেটরিও এ প্রকল্পের আওতায় স্থাপিত হবে।

ভোলায় টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট স্থাপন হচ্ছে
এদিকে, ভোলায় একটি টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট তৈরির জন্য একনেকে প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটির নাম ভোলা টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট স্থাপন প্রকল্প। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বস্ত্র পরিদপ্তর। ২০১৪–এর জুলাই থেকে ২০১৭–এর জুন পর্যন্ত এর বাস্তবায়ন কাল ধরা হয়েছে। সভায় জানানো হয়, ভোলায় এ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটটি স্থাপিত হলে প্রতি বছর ৮০ জন বস্ত্র প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদ তৈরি হবে।

চুয়াডাঙ্গায় হচ্ছে শিল্পনগরী

চুয়াডাঙ্গায় একটি শিল্পনগরী স্থাপন করতে যাচ্ছে সরকার। অনুমোদিত প্রকল্পটির নাম বিসিক শিল্পনগরী, চুয়াডাঙ্গা। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ৩২ কোটি টাকায় ২০১৪ জুলাই থেকে ২০১৭–এর জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। সভায় জানানো হয়, এ প্রকল্পের আওতায় ১৬৯টি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ইউনিট স্থাপন করা হবে।
একনেক সভায় মন্ত্রিপরিষদের বিভিন্ন সদস্যসহ উচ্চপর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।