চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠায় শিক্ষা মেলা বন্ধ
মেলার নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠায় এইম ওয়ার্ল্ডওয়াইড নামের একটি সংগঠন আয়োজিত শিক্ষা মেলা (এডুকেশন এক্সপো) বন্ধ করে দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় থেকে শুধু মেলার অনুমোদন (অনাপত্তি) নিলেও আয়োজকেরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে একটি চিঠি বের করে সেটি দেখিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, বিশেষ করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে মেলায় অংশগ্রহণ করতে হবে বলে প্রচার চালায়। এ জন্য স্পনসরের নামে উচ্চহারে টাকা দাবি করা হয়।
এই অভিযোগে গতকাল বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করে মেলা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন।
সভা শেষে শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আগের রেওয়াজ অনুযায়ী শুধু ওই প্রতিষ্ঠানকে মেলা আয়োজনে অনাপত্তি দিয়েছিলাম। এ সংক্রান্ত নথিতেও তা-ই সিদ্ধান্ত আছে। কিন্তু সেটাকে ব্যবহার করে একটি চিঠির মাধ্যমে আয়োজকেরা যে কর্মকাণ্ড করেছে তাতে আমরা বিস্মিত ও হতবাক হয়েছি। এ জন্য আমরা মেলা আয়োজনের অনাপত্তি বাতিল করে দিয়েছি। ফলে তারা আর মেলা করতে পারবে না।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, মন্ত্রণালয়ের যে কর্মকর্তার (সংশ্লিষ্ট শাখার জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মো. শাহ আলম) স্বাক্ষরে এখতিয়ারবহির্ভূত ওই চিঠি দেওয়া হয়েছে, তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কীভাবে এটি হলো তা অনুসন্ধান করে দেখা হচ্ছে এবং তাঁর ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্ত্রণালয়ের সূত্রমতে, এইম ওয়ার্ল্ডওয়াইড আগামী ১৯ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর রাজধানীতে এডুকেশন এক্সপোর আয়োজন করে। মিঠুন মোস্তাফিজ নামের এক ব্যক্তি ওই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার। মেলায় স্পিকারসহ কয়েকজন মন্ত্রীকে অতিথি রাখার কথা প্রচার করা হয়। মেলার জন্য প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনাপত্তি নিয়ে প্রচারে ও আমন্ত্রণপত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের লোগো ব্যবহার করে তাদের সহযোগী আয়োজক হিসেবে দেখিয়েছে। একই সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের ওই কথিত চিঠি দেখিয়ে তারা বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের স্পনসরের কথা বলে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। শুধু তা-ই নয়, এই মেলায় মেডিকেল কলেজগুলোকেও অংশগ্রহণের জন্য ওই চিঠির অনুলিপি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হয়।
মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো বলছে, এখানে মন্ত্রণালয়ের কোনো কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জড়িত। কারণ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়া একজন জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব এ ধরনের চিঠি দিতে পারেন না।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব শাহ আলম কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।