বর্ষপঞ্জি

.
.

প্রতিদিনের জীবন কতই না সহজ করেছে বর্ষপঞ্জি বা ক্যালেন্ডার। তবে এই বর্ষপঞ্জির বিবর্তনের ইতিহাস হাজার বছরের। ক্যালেন্ডারের প্রচলন হয়েছিল খ্রিষ্টপূর্ব ৭৫৩ বছর আগে প্রাচীন রোমে। রোম শহরের গোড়াপত্তনের দিনকে ভিত্তি ধরে হিসাব করা হতো রোমান বর্ষপঞ্জির। তখন এক বছর হিসাব করা হতো ৩০৪ দিনে। মাসের হিসাবে ১০ মাস। শীতকালের বাকি ৬১ দিন কোনো মাসের অন্তর্ভুক্ত ছিল না। খ্রিষ্টপূর্ব ৭০৩ সালে দ্বিতীয় রোমান সম্রাট নুমা পম্পিলিউস এক বছরে ৩৫৫ দিন নির্ধারণ করেন। আর মাসের হিসাবে ঠিক করেন ১২ মাস।
এরপর রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজারের নাম অনুসারে খ্রিষ্টপূর্ব ৪৫ সালে প্রবর্তন করা হয় জুলিয়ান ক্যালেন্ডার। এর ভিত্তি ছিল সূর্যের প্রদক্ষিণকাল। জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের হাত ধরেই লিপ ইয়ার বা অধিবর্ষের উৎপত্তি। ১৫৮২ খ্রিষ্টাব্দে পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরি প্রবর্তন করেন নতুন এক বর্ষপঞ্জির। তিনি হিসাব করে দেখেন, জুলিয়ান ক্যালেন্ডারে ১১ মিনিটের গরমিল থাকায় ইস্টার ক্রমেই পিছিয়ে যাচ্ছিল। এই গরমিল সমাধানের জন্য গির্জার পক্ষ থেকে ১১ দিন যোগ করে প্রবর্তন করা হয় গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি, যা এখন আমরা অনুসরণ করি।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, গ্রেগরীয় ক্যালেন্ডার প্রবর্তনের পর অনেক বছর পর্যন্ত ক্যাথলিকদের ষড়যন্ত্র হিসেবে মনে করা হতো। ১৭০০ শতাব্দী পর্যন্ত জার্মানি, ব্রিটেনের মতো দেশও এই দিনপঞ্জিকে গ্রহণ না করার সিদ্ধান্তে অটল ছিল। অবশ্য ১৭৫২ খ্রিষ্টাব্দ নাগাদ ব্রিটেনসহ প্রায় সব ইউরোপীয় দেশেই গ্রেগরীয় ক্যালেন্ডার ব্যবহৃত হতে থাকে। আর তা ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে সারা বিশ্বেই।
ইনডিপেনডেন্ট এবং হিস্ট্রি ডটকম অবলম্বনে