ফেরত যাচ্ছে দুস্থদের ২২ মেট্রিক টন চাল

আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিরোধের কারণে পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার দেবোত্তর ইউনিয়নের জন্য বরাদ্দ ভিজিএফের প্রায় ২২ মেট্রিক টন চাল ফেরত যাচ্ছে। ইউনিয়নের দুই হাজার ১৬৫টি ভিজিএফ কার্ডের বিপরীতে এ চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।
পিআইও কার্যালয় সূত্র জানায়, রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আটঘরিয়ার পাঁচটি ইউনিয়নের দুস্থদের ১০ কেজি করে চাল দেওয়ার জন্য ১৪ হাজার ৩২১টি ভিজিএফ কার্ডের বিপরীতে ১৪৩ দশমিক ২১ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ আসে। এর মধ্যে দেবোত্তর ইউনিয়ন দুই হাজার ১৬৫টি কার্ডের বিপরীতে ২১ দশমিক ৬৫ মেট্রিক টন বরাদ্দ পায়। গত ২৩ জুলাই কার্ডগুলো বণ্টনের জন্য ইউপি চেয়ারম্যানদের কাছে তালিকা চাওয়া হয়। ২৮ জুলাই শেষ দিনে চারটি ইউনিয়ন তালিকা জমা দিলেও দেবোত্তর ইউনিয়ন তা দিতে ব্যর্থ হয়। পরে এ ইউপি চেয়ারম্যানকে সময় বাড়িয়ে ৫ আগস্টের মধ্যে তালিকা দিতে বলা হয়। কিন্তু এ সময়ের মধ্যেও তিনি তা না দিয়ে ৭ আগস্ট তালিকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। ফলে বরাদ্দ চাল আর বিতরণ হয়নি।
দেবোত্তর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) একাধিক সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজন জানান, ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মালেক মোল্লা ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি। ফলে ইউনিয়নের অনেক কাজেই আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে তাঁর বিরোধ রয়েছে। এই বিরোধের কারণে কার্ড বিতরণের তালিকা তৈরিতে জটিলতা সৃষ্টি হয়।
আবদুল মালেক মোল্লা অভিযোগ করেন, পরিষদের সভায় জনসংখ্যা অনুযায়ী দুই হাজার ১৬৫টি কার্ড ১২ জন সদস্য ও চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বণ্টনের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু এতে আওয়ামী লীগের নেতারা বাগড়া দেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম ও দেবোত্তর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাইমিন হোসেন এক হাজার কার্ড দাবি করেন। সেই সঙ্গে পরিষদের আওয়ামী লীগপন্থী সাতজন সদস্যও অতিরিক্ত কার্ড দাবি করেন। এ কারণে তালিকা তৈরি করে জমা দেওয়া সম্ভব হয়নি।
অভিযোগ অস্বীকার করে শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার জানামতে, চেয়ারম্যান ইউপি সদস্যদের অল্প কিছু কার্ড দিয়ে বাকিগুলো নিজেই বিতরণ করতে চেয়েছিলেন। এ নিয়ে সদস্যদের সঙ্গে তার বিরোধ হয়েছে। এখানে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ রবিউল ইসলাম ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. আল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা সময় বাড়িয়ে ভিজিএফ কার্ডধারীদের তালিকা সংগ্রহের চেষ্টা করেছি। চেয়ারম্যান একটি তালিকা জমাও দিয়েছিলেন। কিন্তু অধিকাংশ সদস্য ওই তালিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ায় তা বাতিল করা হয়। পরে চেয়ারম্যানকে নতুন তালিকা দিতে বললে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত জানালে কার্ডগুলোর ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’