সীমান্তে হত্যা বাড়ায় উদ্বেগ বাংলাদেশের

সীমান্তে হত্যা বাড়ায় বাংলাদেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ-ভারত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে সাম্প্রতিককালের সীমান্ত হত্যা বৃদ্ধি নিয়ে এই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। দুদিনের এই বৈঠক আজ সোমবার শুরু হয়েছে। কাল মঙ্গলবার বৈঠকে অংশ নেবেন দুই দেশের স্বরাষ্ট্রসচিবেরা।

আজকের বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুস্তাফা কামালউদ্দিন। মন্ত্রণালয়ের অন্য পদস্থ কর্মকর্তারা ছাড়াও তাঁর সঙ্গী ছিলেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মহাপরিচালক আজিজ আহমেদ। ভারতের পক্ষে বৈঠকের নেতৃত্বে ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শম্ভু সিং। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) প্রধান ডি কে পাঠকও উপস্থিত ছিলেন। দুই ঘণ্টার বৈঠকে অন্য বিষয়ের মধ্যে সীমান্ত হত্যা প্রসঙ্গটি প্রাধান্য পায়। সীমান্ত হত্যা হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশের পক্ষে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বলা হয়, সীমান্ত-হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনাই ছিল দুই দেশের স্বীকৃত নীতি। কিন্তু ইদানীং দেখা যাচ্ছে, সীমান্ত হত্যা কমেনি।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রও স্বীকার করেছে, কয়েক মাসে পূর্ব সীমান্তে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু ঘটেছে। এই ঘটনার কারণ হিসেবে সীমান্তপারের ‘দুষ্কৃতকারীদের প্ররোচনা ও উসকানি’ তুলে ধরা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের এক সূত্র সোমবার রাতে প্রথম আলোকে বলে, সীমান্তরক্ষী বাহিনী এখনো প্রাণঘাতী বুলেট ব্যবহার করছে না। কিন্তু বিশেষত গরু পাচারকারী ও চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত দুষ্কৃতকারীরা দল বেঁধে বিএসএফের জওয়ানদের ওপর আক্রমণ করছে। বিষয়টি নিয়ে কাল মঙ্গলবার বিস্তারিত আলোচনা হবে।
দুদিনের এই বৈঠকে বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, নিরাপত্তাবিষয়ক বিভিন্ন বিষয়, মানুষ পাচার ও চোরাচালান বন্ধে যৌথ উদ্যোগ, দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা ও আস্থাবর্ধক ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন চুক্তি রূপায়ণের বিষয়গুলি আলোচনা হবে।
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রসচিব মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক খান ও ভারতের নতুন স্বরাষ্ট্রসচিব এল সি গোয়েল মঙ্গলবারের বৈঠকে যুগ্ম ওয়ার্কিং গ্রুপের বিভিন্ন বিষয় পর্যালোচনা করবেন। সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়টি দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিচার্য হলেও এই চুক্তি রূপায়ণের বেশ কিছু বিষয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে। এই বৈঠকে সেই বিষয়গুলি নিয়েও আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়ন ও সহযোগিতা বাড়ানোর জন্যই এই যুগ্ম ওয়ার্কিং গ্রুপের সৃষ্টি। এর আগের বৈঠকটি হয়েছিল গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর, ঢাকায়।