ইটভাটার জায়গা বাড়াতে নদী দখল, হুমকিতে সেতু

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে বাঙ্গালী নদী দখল করে ব্যক্তিমালিকানাধীন ইটভাটা সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। এতে নদীর গতিপথ বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে সারিয়াকান্দি সেতু হুমকির মুখে পড়েছে। ছবিটি গতকাল সকালে তোলা l প্রথম আলো
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে বাঙ্গালী নদী দখল করে ব্যক্তিমালিকানাধীন ইটভাটা সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। এতে নদীর গতিপথ বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে সারিয়াকান্দি সেতু হুমকির মুখে পড়েছে। ছবিটি গতকাল সকালে তোলা l প্রথম আলো

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে বাঙ্গালী নদী দখল করে লিয়ন ব্রিকস নামের একটি ইটভাটার জায়গা সম্প্রসারণ করায় নদীর গতিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে­ সারিয়াকান্দি সেতুও হুমকির মুখে পড়েছে।
দুই বছর ধরে ওই ইটভাটার মালিক মোস্তাফিজুর রহমান নদীতে ইটের টুকরো ফেলে ভরাট করে পাড়ে ইটের গাঁথুনি তুলে বাঁধাই করে ভাটার জায়গা বাড়িয়েছেন। এতে নদী ও সদ্যনির্মিত সেতুটি হমকির মুখে পড়ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
গত রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, সারিয়াকান্দি সেতুর পাশেই ‘লিয়ন ব্রিকস ফিল্ড’ নামের ইটভাটাটি। ভাটির দিকে নদীর গতিপথ বেশ প্রশস্ত থাকলেও ১০০ গজ উজানে সেতুসংলগ্ন নদীর গতিপথ বেশ সংকুচিত হয়ে এসেছে। দীর্ঘদিন ধরে ভরাট কার্যক্রম অব্যাহত থাকায় আস্তে আস্তে নদীর ডান তীর সংকুচিত হয়ে সেতুটি হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।
স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেন, কয়েক মাস আগে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সারিয়াকান্দির ওই সেতুটি উদ্বোধন করেন। অথচ ভাটার মালিক মোস্তাফিজুর রহমান গায়ের জোরে নদীর জায়গা দখল করেই চলেছেন। প্রায় দুই বছর ধরে মোস্তাফিজুর শ্রমিক লাগিয়ে ভাটার ভাঙা ইট, খোয়া নির্বিচারে নদীতে ফেলছেন। ভরাট করা নদীর কিনারে ইটের গাঁথুনি তুলে সেই জায়গা নিজের দখলে নিচ্ছেন। এতে নদীর অস্তিত্বই শুধু হুমকির মুখে পড়ছে না, কোটি টাকার সেতুটিও হুমকির মুখে পড়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের বগুড়া বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক এ কে এম মাসুদুজ্জামান বলেন, নদীর গতিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হলে কিংবা নদী হুমকির মুখে পড়লে ওই এলাকার পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যও হুমকির মুখে পড়বে। নদী দখলের বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে।
মোস্তাফিজুর রহমান দাবি করেন, তিনি নদীর জায়গা দখল করছেন না। যে জায়গা ভরাট করা হচ্ছে তা তাঁর নিজস্ব সম্পত্তি। তিনি বলেন, ‘১৯৯৬ সালে তিনজন ব্যক্তির কাছ থেকে নারচি মৌজার ৩২ শতক
জায়গা কিনেছি। সেটার কিছু অংশ নদীগর্ভে ভেঙে গেছে। ভাঙনকবলিত ওই অংশেই ইটের টুকরা ফেলে ভরাট করছি। জায়গা নদীর হলে প্রশাসন বাধা দিত।’
সড়ক ও জনপথ বিভাগের বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিষয়টি পাউবো ও প্রশাসনকে দ্রুত জানানো হবে।
পাউবো বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রুহুল আমিন বলেন, সরেজমিন পরিদর্শন করে বাঙ্গালী নদীর দখলদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে|