অস্ত্রোপচারকালে মৃত্যু অর্থ দিয়ে মীমাংসা

১৯ বছরের টগবগে তরুণ মো. বিল্লাল হোসেন। গলার টনসিল অস্ত্রোপচারের জন্য ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। কিন্তু অস্ত্রোপচার শুরুর ২০ মিনিটের মাথায় তাঁর মৃত্যু হয়।
গত বৃহস্পতিবার চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলা সদরের শাহিমরান প্রাইভেট হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিল্লালের আত্মীয়স্বজন চিকিৎসকদের মারধর ও হাসপাতাল ভাঙচুর করার চেষ্টা করলে হাজীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতি ও থানার পুলিশের উদ্যোগে সমঝোতা বৈঠক হয়। বৈঠকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিল্লালের পরিবারকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে ঘটনাটি মীমাংসা করে। বিল্লাল লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের আবদুর রহমানের ছেলে।
শাহিমরান হাসপাতালের তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার বেলা তিনটায় বিল্লালকে অস্ত্রোপচার কক্ষে নেওয়া হয়। হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিশেষজ্ঞ মো. ওবায়দুল ইসলাম অস্ত্রোপচার শুরু করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন একজন শিক্ষানবিশ অবেদনবিদ। ২০ মিনিটের মধ্যে বিল্লালের মৃত্যু হয়। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) অবেদনবিদ মো. সাইফুল ইসলামকে নিয়ে এসে বিল্লালকে দেখায়। সাইফুল ইসলাম বলেন, অচেতন করার সময় সমস্যা হওয়ায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে তাঁর ধারণা। তিনি বলেন, ‘আমি খোঁজ নিয়ে যতটুকু জেনেছি, অবেদনবিদ চিকিৎসক ঢাকার একটি হাসপাতালে শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করেন। আর ওবায়দুল ইসলামের অভিজ্ঞতা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।’
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষানবিশ অবেদনবিদের নাম প্রকাশ করতে রাজি হয়নি। বিল্লালের মৃত্যুর পর চিকিৎসক ওবায়দুল ও অবেদনবিদ পালিয়ে যাওয়ায় তাঁদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বিল্লালের বাবা আবদুর রহমান অভিযোগ করেন, ‘চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসার কারণে অস্ত্রোপচার কক্ষেই আমার ছেলে মারা গেছে। পরে পুলিশ ও বাজারের ব্যবসায়ীরা এক লাখ ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে মীমাংসা করে দেন।’
ওই হাসপাতালের প্রধান পরিচালক এম ইসলাম সুমনও স্বীকার করেন, মৃতের পরিবারকে অর্থ দিয়ে ঘটনা মিটমাট করে দেওয়া হয়েছে। থানার ওসি দেওয়ান আবুল হোসেন জানান, এ ঘটনায় ছেলের বাবা কোনো অভিযোগ দেননি।