সেই রসু খাঁর মৃত্যুদণ্ডাদেশ

চাঁদপুরের ক্রমিক খুনি রসু খাঁকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। খুলনার এক পোশাককর্মীকে হত্যার দায়ে গতকাল বুধবার বেলা পৌনে একটার দিকে চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ অরুণাভ চক্রবর্তী এ রায় ঘোষণা করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) সায়দুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, রসু খাঁ ২০০৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর খুলনার দৌলতপুর এলাকার পোশাককর্মী শাহিদাকে (১৯) কৌশলে চাঁদপুর সদর উপজেলার সোহবানপুর এলাকায় ডাকাতিয়া নদীর পারে এনে হাত-পা বেঁধে হত্যা করেন। এ ঘটনায় চাঁদপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। তৎকালীন জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আবদুর রহমানের কাছে রসু খাঁ ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানোর কথা স্বীকার করেছিলেন।
পিপি সায়দুল আরও জানান, গতকাল ওই মামলার রায় ঘোষণার সময় রসু আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। রায় শোনার পরও তিনি ছিলেন নির্বিকার। পরে পুলিশের কড়া নিরাপত্তার মধ্যে রসুকে জেলা কারাগারে নেওয়া হয়।
আদালত সূত্র জানায়, রসুকে ২০০৯ সালের ৭ অক্টোবর রাতে টঙ্গী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে রসুর ক্রমিক খুনের কাহিনি বেরিয়ে আসতে থাকে। পুলিশকে রসু জানিয়েছিলেন, প্রেমে ব্যর্থ হয়ে তিনি ১০১ নারীকে খুনের পরিকল্পনা করেন। এর মধ্যে তিনি ১১টি হত্যাকাণ্ড ঘটাতে সক্ষম হন। ফরিদগঞ্জে ছয়টি, চাঁদপুর সদরে চারটি ও হাইমচরে একটি। রসু যাঁদের হত্যা করেছেন, তাঁরা সবাই ছিলেন ১৬ থেকে ৩৫ বছরের পোশাককর্মী।
রসুর বাড়ি চাঁদপুর সদর উপজেলার মদনা গ্রামে। ছিঁচকে চোর থেকে একসময় তিনি হয়ে ওঠেন ক্রমিক খুনি। রসু প্রেমের অভিনয় করে নিম্নবিত্ত পরিবারের পোশাককর্মীদের ঢাকার সাভার ও টঙ্গি এলাকা থেকে চাঁদপুরের প্রত্যন্ত এলাকায় নিয়ে ধর্ষণের পর হত্যা করতেন। হত্যার শিকার এসব নারী পোশাককর্মীর অধিকাংশেরই সঠিক নাম-ঠিকানা বা পরিচয় আজও জানা যায়নি।
আদালত সূত্র আরও জানায়, বর্তমানে রসুর বিরুদ্ধে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে একটি এবং অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতে সাতটি মামলার বিচারকাজ চলছে।