মা-ছেলে, নানি-নাতনি ও দম্পতিসহ নিহত ১০

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে গত শুক্রবার সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও পণ্যবাহী ট্রাক্টরের মুখোমুখি সংঘর্ষে নানি-নাতনিসহ চারজন নিহত হয়েছে। চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে মা-ছেলে। এদিকে ট্রাক-বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে কক্সবাজারের রামুতে এক দম্পতি নিহত হন। এ ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনায় ফেনীতে একজন এবং চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় একজন প্রাণ হারান।

প্রথম আলোআঞ্চলিক কার্যালয়প্রতিনিধির পাঠানো খবর:

নোয়াখালী: পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত শুক্রবার কবিরহাট বাজার থেকে সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশা যাত্রী নিয়ে কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। বেলা ১১টার দিকে উপজেলা সদরের সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়ের সামনে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক্টরের সঙ্গে অটোরিকশাটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে চারজন নিহত ও চারজন আহত হয়। হতাহত ব্যক্তিদের সবাই অটোরিকশার যাত্রী।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন নোয়াখালী পৌরসভার মধ্যম করিমপুর এলাকার মো. বাবুলের স্ত্রী রোজি বেগম (৫৫), তাঁর নাতনি শহরের দত্তেরহাট এলাকার বেলাল হোসেনের মেয়ে সুমনা (৯), কবিরহাট উপজেলার বাটাইয়া ইউনিয়নের দয়ারামদি গ্রামের অটোরিকশার চালক আবু নাছের (৩৭) এবং একই উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নের ফলাহারী গ্রামের আবদুল্লা আল-মামুন ওরফে পুলক (২৪)।

দুর্ঘটনায় রোজি বেগমের স্বামী মো. বাবুল (৬৫), তাঁর মেয়ে মৌসুমী আক্তার (২০), কবিরহাট উপজেলার নরোত্তমপুর গ্রামের স্বপ্না রানী সূত্রধর (২০) ও একই উপজেলার ফারজানা আক্তার (১৭) আহত হন। তাঁদের নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজেদুর রহমান বলেন, দুর্ঘটনার পর ট্রাক্টরের চালক সাদ্দাম হোসেনকে আটক করা হয়েছে।

হাটহাজারী (চট্টগ্রাম): স্থানীয় সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার চারিয়া বুড়িপুকুরপাড় এলাকায় গত শুক্রবার দুপুরে একটি জিপের সঙ্গে অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে সঞ্জিতা দাশ (৩৫) ও তাঁর বড় ছেলে হৃদয় দাশ (১৩) নিহত হয়েছে।

সঞ্জিতা দাশের বাড়ি হাটহাজারীর কাঠিরহাট এলাকায়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, কাঠিরহাট থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে দুই ছেলেকে নিয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে যাচ্ছিলেন সঞ্জিতা। এ সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় সঞ্জিতার ছোট ছেলে সামান্য আহত হয়।

হাটহাজারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তৌহিদুল করিম জানান, জিপ গাড়িটি আটক করা হয়েছে। তবে চালক পালিয়ে গেছেন।

কক্সবাজার: কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের রামুর রাবেতা নামক স্থানে গত শুক্রবার সকালে লবণবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে স্বামী-স্ত্রী নিহত হয়েছেন।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুরা গ্রামের কবিন দাশ (৩৮) ও তাঁর স্ত্রী উত্তমী দাশ (৩০)।

রামুর তুলাবাগান হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মুজিবুর রহমান জানান, লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। গাড়ি দুটি জব্দ করা হয়েছে। তিনি জানান, দুর্ঘটনায় অন্তত ১৩ যাত্রী আহত হয়েছে।

ফেনী: পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, গত শুক্রবার দুপুরে ফেনী-ছাগলনাইয়া সড়কের ছাগলনাইয়ার পাঠাননগর কন্ট্রাকটর মসজিদ নামক স্থানে একটি দ্রুতগামী বাস মো. সাইফুল ইসলাম সোহাগ (৩০) নামের এক মোটরসাইকেল আরোহীকে চাপা দেয়। ফেনী সদর হাসপাতালে ভর্তির পর তিনি মারা যান। তিনি ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি। তাঁর বাড়ি ছাগলনাইয়া উপজেলার ঘোপাল ইউনিয়নের নিজকুঞ্জরা গ্রামে।

সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম): স্থানীয় সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সাতকানিয়ার মালেক মেম্বারের ব্রিকফিল্ড এলাকায় গত শুক্রবার বিকেলে বাসের ধাক্কায় পথচারী মোস্তাক আহমদ (৭০) নিহত হয়েছেন। এ সময় বাসটি অন্য একটি অটোরিকশাকেও ধাক্কা দেয়। এতে চারজন আহত হয়। আহত ব্যক্তিরা হলেন সাতকানিয়া উপজেলার ফজুরপাড়া এলাকার জাহেদুল ইসলাম, বান্দরবানের আবদুর রহিম ও তাঁর স্ত্রী জান্নাতুল নাঈম এবং কুমিল্লার মো. মহসিন।

নিহত মোস্তাক আহমদের বাড়ি সাতকানিয়া উপজেলার ছদাহা ইউনিয়নের দক্ষিণ ডেমশা কাজীরখীল গ্রামে।

দোহাজারী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম কাওছার চৌধুরী জানান, দুর্ঘটনার পর বাসের চালক পালিয়ে গেছেন। বাসটি আটক করে হাইওয়ে থানায় আনা হয়েছে।