পাসের হারে এবারও পিছিয়ে তিন পার্বত্য জেলা

ভালো ফলাফলের আনন্দে উদ্বেল ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ​দুই শিক্ষার্থী l সৌরভ দাশ
ভালো ফলাফলের আনন্দে উদ্বেল ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ​দুই শিক্ষার্থী l সৌরভ দাশ

মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার ফলাফলে এবারও পিছিয়ে রয়েছে তিন পার্বত্য জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। বরাবরের মতো এগিয়ে আছে চট্টগ্রাম নগরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। তবে এবার সামগ্রিকভাবেই কমেছে পাসের হার।
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডে এবার পাসের হার ৮২ দশমিক ৭৭ শতাংশ। চট্টগ্রাম নগরে পাসের হার ৮৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ। তিন পার্বত্য জেলার পাসের হার ৭০ শতাংশ। গতবার নগরে পাসের হার ছিল ৯৫ দশমিক ৬০। পার্বত্য জেলার পাসের হার ছিল ৮০ শতাংশের উপরে। তখনো পাসের হারে পিছিয়ে ছিল তিন পার্বত্য জেলা।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মাহবুব হাসান গতকাল শনিবার সকালে পরীক্ষার ফল ঘোষণার সময় সাংবাদিকদের বলেন, চট্টগ্রাম নগরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যে রকম অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা আছে, তা প্রত্যন্ত অঞ্চলে নেই। এ ছাড়া সেখানে শিক্ষকের সংকট রয়েছে। এসবের প্রভাব দেখা যায় ফলাফলে। এতে বোর্ডে পাসের হার সামগ্রিকভাবে কমেছে।

উচ্ছ্বসিত চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক  স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা
উচ্ছ্বসিত চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা


মোহাম্মদ মাহবুব হাসান অবশ্য বলেছেন, শিক্ষার মান বৃদ্ধি করতে প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হবে। এ শিক্ষক সংকট নিরসনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিন পাবর্ত্য জেলার মধ্যে রাঙামাটিতে পাসের হার ৭০ দশমিক ৯৯ শতাংশ। এ জেলা থেকে পাঁচ হাজার ৮২৯ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। পাস করে চার হাজার ১৩৮ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১৩ জন। গতবার রাঙামাটি জেলার পাসের হার ছিল ৮০ দশমিক ১৫ শতাংশ।

ফলাফল তো জানা হলো। এবার সেলফি! ছবিটি বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে তোলা
ফলাফল তো জানা হলো। এবার সেলফি! ছবিটি বাংলাদেশ মহিলা সমিতি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে তোলা

খাগড়াছড়ি জেলায় গতবার পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক ১৫ শতাংশ। পাস করেছে ৬৮ দশমিক ৭২ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৬ শিক্ষার্থী। পাঁচ হাজার ৪৩২ শিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে তিন হাজার ৭৩৩ জন।
বান্দরবান জেলায় এবার এক হাজার ৮৪৯ শিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে এক হাজার ১৭২। পাসের হার ৬৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫৫ জন। গতবার এ জেলায় পাসের হার ছিল ৮৬ দশমিক ২৮ শতাংশ।
তিন পার্বত্য জেলার মতো চট্টগ্রাম নগরেও পাসের হার কমেছে। এবারের পাসের হার ৮৯ দশমিক ৮১ শতাংশ। গতবার পাসের হার ছিল ৯৫ দশমিক ৬০ শতাংশ। আর জেলায় পাসের হার ৮২ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
এদিকে কক্সবাজার জেলায় পাসের হার ৮৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ। এ জেলা থেকে অংশ নেওয়া ১১ হাজার ২৯ শিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে নয় হাজার ৩২৭ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬০২ শিক্ষার্থী।
এবারের পরীক্ষার ফলে বোর্ডে দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হাসমত জাহান বলেন, নগরের বাইরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষকেরা অনেক সময় ভালোভাবে প্রশিক্ষণ পান না। এতে উন্নতমানের পাঠদানের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয় শিক্ষার্থীরা। এ ব্যাপারে নজর দেওয়া উচিত।