মাঝ পাথেই বন্ধ সড়কের সংস্কারকাজ

গোরকঘাটা শাপলাপুর এলাকার নির্মাণাধীন সেতুর পাশে বিকল্প সড়ক ভেঙে যাওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন l প্রথম আলো
গোরকঘাটা শাপলাপুর এলাকার নির্মাণাধীন সেতুর পাশে বিকল্প সড়ক ভেঙে যাওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন l প্রথম আলো

দাপ্তরিক জটিলতার কারণ দেখিয়ে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার ২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ গোরকঘাটা-শাপলাপুর ও জনতা বাজার সড়কের সংস্কারকাজ বন্ধ করে দিয়েছেন ঠিকাদার। প্রায় সাড়ে আট কোটি টাকার এই সংস্কারকাজ গত ৩ মার্চ শেষ করা কথা ছিল। সাত কিলোমিটার সড়কের সংস্কারকাজ বাকি থাকতেই গত মে মাসের শুরুতে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চার বছর আগে বর্ষার মৌসুমে পাহাড়ি ঢলে ও ভারী বৃষ্টিতে গোরকঘাটা-শাপলাপুর ও জনতা বাজার সড়কের শাপলাপুর ইউনিয়নের ষাইটমারা, জেমঘাটের দক্ষিণ এলাকা, বারিয়ারপাড়া, মিঠাছড়িসহ ২৫ কিলোমিটার এলাকায় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর এ সড়ক সংস্কারের জন্য প্রায় ৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেন। সড়কের সংস্কারকাজের দায়িত্ব পান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান র্যাব আরসি প্রাইভেট লিমিডেট। দরপত্র অনুযায়ী, সড়কের দুই পাশে মাটি ফেলা ও পিচ ঢালাইয়ের পাশাপাশি, কালভার্ট, ক্রস ড্রেন, ধারক দেয়াল ও বক্স কালভার্ট নির্মাণ করার কথা।
গত বছরের ২১ এপ্রিল শুরু করে চলতি বছরের ৩ মার্চ সংস্কারকাজ শেষ করার কথা। কিন্তু ঠিকাদার যথাসময়ে সংস্কারকাজ শেষ করেননি। ফলে প্রায় সাত কিলোমিটার সড়কের সংস্কার বন্ধ রেখে এক মাস আগে ঠিকাদারের লোকজন চলে যায়। এতে যাতায়াত করতে গিয়ে স্থানীয় জনগণ ভোগান্তিতে পড়ে। এ ছাড়া ওই সড়কে দুটি কালভার্ট ও দুটি সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর প্রায় দুই কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। কাজ পান একই ঠিকাদার। গত ২২ মার্চ শুরু হওয়া এই কাজ ২২ জুলাই শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো একটি কালভার্ট ও একটি সেতুর নির্মাণকাজ এখনো শুরুই হয়নি।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের দক্ষিণকুল, উত্তরকুল, কালামারদিয়া, বড়খোলা, মোরিইছড়ি, শাপলাপুর ইউনিয়নের কায়দাবাদা ও দিনেশপুর এলাকায় প্রায় সাত কিলোমিটার সড়কে খানাখন্দে ভরা। সংস্কারকাজে ঠিকাদারের কোনো শ্রমিককে দেখা যায়নি।
অপরদিকে, শাপলাপুর বাজারের উত্তর পাশের সেতু ও জামিরছড়ি কালভার্ট নির্মাণের জন্য ঠিকাদারের নিয়োজিত শ্রমিকদের কাজ করতে দেখা গেছে। স্থানীয় জনগণের যাতায়াত করার জন্য শাপলাপুর বাজারের উত্তরে নির্মাণাধীন সেতুর পাশে বিকল্প সড়ক নির্মাণ করলেও তা ভেঙে গেছে। কালভার্ট ও সেতু নির্মাণে ধীর গতি এবং সড়ক সংস্কার কাজ অসমাপ্ত থাকায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। বর্ষার আগেই কাজ শেষ না হলে সংস্কারকাজ কোনো উপকারেই আসবে না বলে মনে করেন এলাকাবাসী।
কার্যাদেশ অনুযায়ী কাজ শেষ না হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট নির্মাণকাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার মোহাম্মদ দিদারুল ইসলাম বলেন, দাপ্তরিক জটিলতার কারণে গোরকঘাটা-শাপলাপুর ও জনতা বাজার সড়কের এক মাস ধরে সংস্কারকাজ বন্ধ ছিল। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে। আগামী এক মাসের মধ্যে সংস্কার শেষ করা হবে।
নির্মাণাধীন শাপলাপুর হরিয়ারছড়া সেতুর পাশে বিকল্প সড়ক করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলের কবলে পড়ে বিকল্প সড়কটি ভেঙে গেছে। তাই অচিরেই বিকল্প সড়ক সংস্কার করে গাড়ি চলাচলের উপযোগী করা হবে।
জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী মো. মোশাররেফ হোসেন বলেন, এক মাস ধরে সড়কের সংস্কার বন্ধ থাকায় জনগণের ভোগান্তির শেষ নেই। তাই জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার শেষ করতে ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।