মাদকবিরোধী প্রতিবেদনের জন্য পুরস্কার পেলেন ৬ সাংবাদিক

অতিথিদের সঙ্গে প্রথম আলো ট্রাস্ট আয়োজিত মাদকবিরোধী সেরা প্রতিবেদন পুরস্কার পাওয়া সাংবাদিকেরা। ছবি: সাহাদাত পারভেজ
অতিথিদের সঙ্গে প্রথম আলো ট্রাস্ট আয়োজিত মাদকবিরোধী সেরা প্রতিবেদন পুরস্কার পাওয়া সাংবাদিকেরা। ছবি: সাহাদাত পারভেজ

প্রথম আলোর মাদকবিরোধী সেরা প্রতিবেদন পুরস্কার পেলেন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ছয়জন সাংবাদিক। প্রথম আলো ট্রাস্ট মাদকবিরোধী আন্দোলন আয়োজিত মাদকবিরোধী সেরা প্রতিবেদনের জন্য এ পুরস্কার দেওয়া হয়।

আজ সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও অন্য অতিথিরা পুরস্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিকদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
পঞ্চমবারের মতো আয়োজিত প্রতিযোগিতায় সংবাদপত্র শাখায় প্রথম হয়েছেন বাংলা ট্রিবিউনের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক উদিসা ইসলাম, দ্বিতীয় প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক কাজী আনিছ ও তৃতীয় আঞ্চলিক পত্রিকা বরিশালের কথার নিজস্ব প্রতিবেদক এ এম জুয়েল। টেলিভিশন ও রেডিও শাখায় প্রথম হয়েছেন মাছরাঙা টিভির নিজস্ব প্রতিবেদক ওবায়দুল কবির, দ্বিতীয় বৈশাখী টিভির জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক দীপু সারওয়ার ও তৃতীয় হয়েছেন ইনডিপেনডেন্ট টিভির মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধি রাজিবুল হক সুমন।
সনদের পাশাপাশি প্রথম বিজয়ী ৫০ হাজার, দ্বিতীয় ২৫ হাজার ও তৃতীয় বিজয়ী ১৫ হাজার টাকা করে পেয়েছেন। পুরস্কার হিসেবে বিজয়ীরা চেক, সনদ ও মেডেল পেয়েছেন। এবার সংবাদপত্র বিভাগে মোট ২০টি এবং টেলিভিশন ও রেডিও বিভাগে মোট ১৫টি প্রতিবেদন জমা পড়ে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, মাদক প্রতিরোধে সমাজের সর্বস্তরের সচেতন মহলকে একযোগে কাজ করতে হবে। মানুষকে মাদকের কুফল সম্পর্কে জানাতে হবে। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকেও রাখতে হবে কার্যকর ভূমিকা।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর মাদকের কারণে যে কত বাবার হাহাকার শুনি, কত মায়ের কান্না শুনি, তা বলে শেষ করা যাবে না। মাদক মানুষের মেধা ও মননকে নষ্ট কর দেয়। দেশের বাইরে থেকে আমাদের দেশে মাদক বিশেষ করে ইয়াবা ও ফেনসিডিল ঢুকছে। আর মাদকের বাহক হিসেবে কাজ করছে রোহিঙ্গারা। প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদেরও সর্বোচ্চ শাস্তি দিচ্ছি। কিন্তু সমাজ থেকে মাদক নির্মূল করতে হলে সবাইকেই একযোগে কাজ করতে হবে।’
অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে নেওয়া মাদকবিরোধী নানা কার্যক্রম তুলে ধরেন প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম। তিনি বলেন, প্রত্যেক পরিবার আজ মাদকের ভয়াবহতা নিয়ে শঙ্কিত। তাই মাদককে আইনগতভাবে মোকাবিলা করার পাশাপাশি সচেতনতাও বৃদ্ধি করতে হবে।
প্রথম আলো ট্রাস্ট মাদকবিরোধী আন্দোলনের উপদেষ্টা বিশিষ্ট মনোরোগ বিশেষজ্ঞ মোহিত কামাল বলেন, মাদক মানুষকে দানবে পরিণত করে। প্রথম আলো ট্রাস্ট মাদকের ভয়াবহতা রোধে বিভিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে। মাদকবিরোধী সচেতনতা বৃদ্ধিতে নেওয়া হচ্ছে সচেতনতামূলক কার্যক্রম। এসব কার্যক্রমে প্রথম আলোর বন্ধুসভার সদস্যরাও অংশগ্রহণ করে।
সেরা প্রতিবেদন প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর। তিনি প্রতিযোগীদের উদ্দেশে বলেন, মাদকবিরোধী প্রতিবেদনে যথাযথ তথ্য, সরেজমিন বিশ্লেষণ ও তথ্যের স্বপক্ষে প্রমাণ থাকতে হয়। সাধারণ আলাপচারিতা দিয়ে প্রতিবেদন হয় না। প্রতিবেদকদের এ বিষয়গুলোর দিকে লক্ষ্যে রাখতে হবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রকল্প পরিচালক ও প্রথম আলো ট্রাস্টের কোষাধ্যক্ষ সামন্ত লাল সেন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে প্রথম আলো ট্রাস্ট মাদকবিরোধী আন্দোলনের উপদেষ্টা ডা. আহমেদ হেলাল, ডা. ফারজানা ইসলাম, ডা. অভ্র দাশ ভৌমিক, জিল্লুর রহমান খানসহ প্রথম আলোর সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রথম আলো ট্রাস্টের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা আজিজা আহমেদ।