প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে উৎকোচ দাবির অভিযোগ

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে উপজেলার শতাধিক বিদ্যালয় ভবনের নির্মাণকাজ করা ঠিকাদারদের বিল ও জামানতের টাকা ফেরত প্রদানে ঘুষ দাবির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে ১৩ জুলাই ৩৭ জন ঠিকাদার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রধান প্রকৌশলীর কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।   

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০১২-১৩ ও ২০১৩-১৪ অর্থবছরে উপজেলায় ১০৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণকাজ শুরু হয়। এক বছর আগে এসব ভবনের বেশির ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি কাজের বিপরীতে মোট বরাদ্দ করা টাকার শতকরা ৫ ভাগ জামানত এবং শতকরা ১০ ভাগ টাকা কর্তন করে রাখা হয়। কাজ শেষে জামানত ফেরত ও চূড়ান্ত বিলের জন্য উপজেলা প্রকৌশলীর মাধ্যমে এলজিইডি রংপুর অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলীর (শিক্ষা) কাছে আবেদন জানাতে হয়। নির্বাহী প্রকৌশলী তদন্ত শেষে প্রত্যয়নপত্র দিলে ঠিকাদারদের জামানত ফেরত এবং চূড়ান্ত বিল দেওয়ার কথা উপজেলা প্রকৌশলীর। কিন্তু উপজেলা প্রকৌশলী আবু সালেহ মো. জাফর কাজ শেষ করা ঠিকাদারদের জামানত ফেরত এবং চূড়ান্ত বিল প্রদানে ঘুষ দাবি করছেন। যেসব ঠিকাদার মোটা অঙ্কের টাকা ঘুষ দিচ্ছেন, কেবল তাঁদেরই জামানত ফেরত এবং বিল দেওয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত আটজন ঠিকাদারকে টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নির্বাহী প্রকৌশলীর প্রত্যয়নপত্র থাকার পরও ঘুষ না দেওয়ায় অনেকেই টাকা পাচ্ছেন না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ঠিকাদার অভিযোগ করেন, ‘আমি একটি বিদ্যালয়ের কাজ করি। এলজিইডি রংপুর অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী (শিক্ষা) প্রত্যয়নপত্রও দিয়েছেন। কিন্তু তারপরও আমাকে জামানতের টাকা ও চূড়ান্ত বিল দেওয়া হচ্ছে না। বিল চাইলে ঘুষ দাবি করা হচ্ছে।’

ঠিকাদার সোহেব হোসেন ও সাইদুর রহমান বলেন, জেলার ৪৫ জন ঠিকাদার ১০৬টি বিদ্যালয় ভবনের নির্মাণকাজ করেন। এর মধ্যে মাত্র আটজন বিল পেয়েছেন। নির্বাহী প্রকৌশলীর (শিক্ষা) প্রত্যয়ন দেওয়ার পরও উপজেলা প্রকৌশলী বাকিদের চূড়ান্ত বিল দিতে টালবাহানা করছেন। 

এসব বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা প্রকৌশলী আবু সালেহঘুষ নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘প্রতিটি বিদ্যালয়ে তিনটি প্যাকেজে কাজ হয়েছে। এই তিন প্যাকেজের মধ্যে একটিতে কাঠের, একটিতে বিদ্যুৎ ও আরেকটিতে নির্মাণকাজ করানো হয়। ঠিকাদারেরা কোনোটিতে দুইটি, কোনটিতে একটি প্যাকেজের কাজ করে বিল দাবি করছেন। তাই পুরো কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় জামানত ফেরত কিংবা চূড়ান্ত বিল দেওয়া হচ্ছে না। ঠিকাদারদের অযৌক্তিক দাবি না মানায় তাঁরা আমার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছেন।’

তবে নির্বাহী প্রকৌশলী (শিক্ষা) মতিয়ার রহমান বলেন, নিয়ম অনুযায়ী সরেজমিনে কাজ দেখেই অন্তত ৩৬ জন ঠিকাদারকে তিনি প্রত্যয়নপত্র দিয়েছেন।