মূল আসামি ছাত্রলীগ নেতা সেন সুমনসহ গ্রেপ্তার ২

মাগুরায় মায়ের পেটে শিশু গুলিবিদ্ধ
মাগুরায় মায়ের পেটে শিশু গুলিবিদ্ধ

মাগুরায় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে মা ও মায়ের পেটে থাকা শিশু গুলিবিদ্ধ হওয়ার মামলার মূল আসামি জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সেন সুমনসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাজধানী থেকে সেন সুমনকে র্যাব ও মাগুরা থেকে ১৩ নম্বর আসামি নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে মাগুরার গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
এদিকে মায়ের পেটে গুলিবিদ্ধ শিশু ‘বেবি অব নাজমা’র খাওয়াদাওয়ার পরিমাণ একটু একটু করে বাড়ছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। সে ও তার মা নাজমা বেগম দুজনেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে পৃথক ওয়ার্ডে।
র্যাব দাবি করেছে, গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর কল্যাণপুর থেকে সেন সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে গতকাল দুপুর থেকেই তাঁকে গ্রেপ্তারের কথা শোনা যাচ্ছিল। বিকেলে মাগুরা জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী হোসেন ওরফে মুক্তা বলেন, কল্যাণপুরে বন্ধুর বাসা থেকে সেন সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তবে বিকেল পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেন সুমনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। সন্ধ্যায় র্যাব সদর দপ্তর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। র্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল কালাম আজাদ পরে প্রথম আলোকে বলেন, সন্ধ্যায় র্যাব-৪ কল্যাণপুর থেকে সেন সুমনকে গ্রেপ্তার করেছে।
নজরুল ইসলামকে সন্ধ্যায় মাগুরায় গ্রেপ্তার করে জেলা ডিবি পুলিশ। এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও মাগুরা জেলা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ইমাউল হক প্রথম আলোকে বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার ওয়াপদা এলাকায় ঢাকা থেকে খুলনাগামী একটি বাস থেকে নজরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে এই মামলার এজাহারভুক্ত ১৬ জন আসামির মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হলো। এর আগে জেলা ডিবি পুলিশ এ মামলার ৫ নম্বর আসামি মো. সুমন ও ১৪ নম্বর আসামি সোবহানকে গ্রেপ্তার করেছিল।
শিশুটির খাওয়াদাওয়ার পরিমাণ বেড়েছে: ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কানিজ শিউলি প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিশুটির অবস্থা একটু ভালোর দিকে। তার খাওয়াদাওয়ার পরিমাণ একটু একটু করে বাড়ছে। কিন্তু ওর ওজন কম, সময়ের অনেক আগে জন্মেছে। ঝুঁকিমুক্ত বলছি না। যেদিন ওকে মায়ের কোলে দিতে পারব, সেদিনই নিশ্চিতভাবে বলা যাবে ও ভালো আছে।’
শিশুটির বাবা বাচ্চু ভূঁইয়া বলেন, তাঁর স্ত্রী নাজমার সঙ্গে এখনো মেয়ের দেখা হয়নি। নাজমা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। শিশুটিকে দেখলে নাজমার শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে পারে, এই আশঙ্কায় মেয়েকে দেখতে দেওয়া হয়নি।
গত ২৩ জুলাই মাগুরা শহরের দোয়ারপাড় কারিগরপাড়ায় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হন অন্তঃসত্ত্বা নাজমা বেগম। গুলি মায়ের পেটের ভেতরে থাকা শিশুর শরীরও এফোঁড়-ওফোঁড় করে দেয়। মাগুরায় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শিশুটির জন্ম হয়। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। এরপর পাঠানো হয় তার মাকে। ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ ও বোমায় আহত নাজমার চাচাশ্বশুর মমিন ভূঁইয়া পরদিন মারা যান।