হাসিনা-খালেদা টেলিফোনে যা বলেছিলেন-২

শেখ হাসিনা: আমরা নিশ্চয় ঝগড়া করতে চাই না।

খালেদা জিয়া: আপনি তো ঝগড়া করছেনই।

শেখ হাসিনা: একরতফা বলে যাচ্ছেন। আমাকে তো কথা বলারই সুযোগ দিচ্ছেন না।

খালেদা জিয়া: আমি একতরফা বলব কেন। আপনি কথা বলছেন আমি জবাব দিচ্ছি শুধু। 

শেখ হাসিনা: আমি তো আপনার সঙ্গে কথা বলারই সুযোগ পাচ্ছি না।

খালেদা জিয়া: আপনি বারবার বলছেন হরতাল হরতাল। হরতাল এখন প্রত্যাহার হবে না। আমাদের কর্মসূচি শেষ হলে তারপর যদি...আপনি জানেন। আপনি যদি...

শেখ হাসিনা: হরতালের নামে মানুষ খুন করা অব্যাহত রাখবেন?

খালেদা জিয়া: আমি মানুষ খুন করতে চাই না। আপনারা মানুষ খুন করেছেন। কালকেও নয়জন মানুষ আমার খুন করেছেন আপনারা।...আপনার ছাত্রলীগ যুবলীগ করে না।

শেখ হাসিনা: না।

খালেদা জিয়া: আপনার ছাত্রলীগ-যুবলীগের আমরা অস্ত্রসহ ছবি দেখাতে পারব। আপনার ছাত্রলীগ-যুবলীগ কীভাবে খুন করে নিরীহ মানুষকে।

শেখ হাসিনা: বললাম তো খুনের রাজনীতি আমরা করি না; বরং আমি দেখি...

খালেদা জিয়া: ...আপনাদের তো পুরানা অভ্যাস। আপনারা সেই স্বাধীনতার পর থেকে ৭১-এ যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখনও এই হত্যা করেছেন। এত মানুষ হত্যা করেছেন। এগুলো ভুলে গেছেন আপনি?

শেখ হাসিনা: একাত্তরে আমরা মানুষ হত্যা করেছি?

খালেদা জিয়া: হ্যাঁ অবশ্যই। একাত্তরের পরে

শেখ হাসিনা: যুদ্ধপরাধীদের রক্ষার জন্য ...

খালেদা জিয়া: যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার জন্য নয়...। আপনারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার যদি ঠিকমতো করতেন তাহলে আমরা পূর্ণ সমর্থন দিতাম। কিন্তু আপনারা সেই ট্রাইব্যুনাল করেননি। না করে, একতরফা করেছেন এবং আপনার দলে যে অনেক যুদ্ধাপরাধী আছে, সেগুলো একটাও ধরেননি। সেগুলোকে একটাও কেন ধরেননি?

আপনি তো প্রধানমন্ত্রী নন। দলের প্রধানমন্ত্রী। আপনি তো দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেননি। নিরপেক্ষতার ঊর্ধ্বে আপনি যেতে পারেননি। তবে ...

না হলে, আমার সঙ্গে এই আচরণ তো আপনারা করতেন না, যা করেছেন আপনারা। আমার সঙ্গে যেই আচরণ করেছেন, সেদিন আমার পার্টি অফিসে আপনারা যে আচরণ করলেন, এরপর আর বলতে হবে? বিরোধীদলীয় নেতাকে আপনারা সম্মান দিতে জানেন না। কিসের গণতন্ত্রের কথা বলেন আপনি।

শেখ হাসিনা: আপনার কথার জবাব দিতে গেলে আমাকে তো সেই ২০০১ থেকে অনেক কথা বলতে হবে।

খালেদা জিয়া: সেটার জবাব আমিও দিতে পারি। আপনি দিবেন আমিও দিতে পারি...

শেখ হাসিনা: ...এরশাদ বা তার দলের সঙ্গে কী কী করেছিলেন। আর ২০০১ সালে...

খালেদা জিয়া: একাত্তর সালে আমরা কিছু করিনি। এরশাদের সময় যত করেছেন আপনারা। এরশাদ যখন একটি নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা নিল, তারপর আপনি বললেন আই এম নট আনহ্যাপি। আপনি যখন বিবিসিকে বললেন। ...ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিন কোন সংবিধানের অধীনে ক্ষমতা নিল...

শেখ হাসিনা: ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিন আপনার চয়েজ ছিল।

খালেদা জিয়া: ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিন আমার চয়েজ ছিল না। আপনার চয়েজ ছিল। আপনি নিজে বলেছেন আপনার আন্দোলনের ফসল। এগুলো ভুলে যান কেন? মানুষ তো ভুলে না সেগুলো।

শেখ হাসিনা: নয়জন অফিসার ডিঙ্গিয়ে মইনুদ্দিনকে আপনি আর্মি চিফ বানিয়েছিলেন।

খালেদা জিয়া: আপনি এমন অনেক অফিসারকে বাড়ি পাঠিয়েছেন। সেটা নয়জন না সাতজন, সেটা কথা নয়। আপনি অনেককে ডিঙ্গিয়ে বাড়ি পাঠিয়েছেন। মইনুদ্দিন যেই থাকুক না কেন যখন এটা করল, সেখানে আপনারা...সেই ইয়েতে গেলেন কেন আপনি। সেটা সংবিধানসম্মত হয়নি। সংবিধানসম্মত ছিল না। সেটাতে কেন গেলেন আপনি? সেদিন তো আপনি মনে করেননি। আমরা দুই দলই তখন ক্ষমতার বাইরে...

তখন তো একবার মনে করলেন না আমরা আলোচনা করি। ফখরুদিন-মইনুদ্দিনের এখানে যাওয়া ঠিক হবে না। এরা সংবিধানসম্মত নয়। আপনি তো সেটা মনে করলেন না।  চলে গেলেন সেখানে হাসিমুখে।

শেখ হাসিনা: ...আমি আগুনে বসেও হাসিখুশি থাকি। আবার বাবা, মা, ভাই...

খালেদা জিয়া: ...অতীত ছেড়ে দিয়ে আমি বলতে চাই এখন সামনের দিকে কী করে আগাবেন...আপনার যদি সত্যি সত্ উদ্দেশ্য থাকে তাহলে আমরা সামনের দিকে কী করে এগুবো...সামনের দিকে এগুতে চাই।

শেখ হাসিনা: আপনি তো অনেক অভিযোগ করলেন। আমি তো এত অভিযোগ করতে চাই না। ছোট্ট রাসেল..., ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছেন।

খালেদা জিয়া: ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা আপনারা করিয়েছেন। আপনাকে হত্যা করতে কেউ চায়নি।...আপনি যত থাকবেন, তত আমাদের জন্য ভালো।...

শেখ হাসিনা: ১৫ আগস্ট আপনি যখন কেক কাটেন...

খালেদা জিয়া: ১৫ আগস্ট আমার জন্মদিন। আমি কেক কাটবই।

শেখ হাসিনা: খুনিদের উত্সাহিত করার জন্য যখন আপনি কেক কাটেন।...

খালেদা জিয়া: ...এটা বলেন না। ১৫ আগস্ট বাংলাদেশে কোনো মানুষের জন্ম হবে না? কোনো মানুষ পালন করবে না। এগুলো বাদ দেন। কথায় কথায় আপনরা বলেন। অনেক কথা বলেন জিয়াউর রহমানকে। আরে জিয়াউর রহমান তো আপনাদের নতুন জীবন দান করেছে। এগুলো কথা বইলেন না। বুঝেছেন। আপনারা তো বাকশাল ছিলেন।... আপনারা জিয়াউর রহমানের বদলৌতে আওয়ামী লীগ হতে পেরেছেন। আদার ওয়াইজ আওয়ামী লীগ হতে পারতেন না।

শেখ হাসিনা: ... রাসেলকে তো এই বাসায় ঘুরতেও দেখেছেন।...

খালেদা জিয়া: নতুন করে শুরু করি। সেটাতে আপনি রাজি থাকেন, আসেন আমরা সুন্দর আলোচনা করি। আমার আলোচনা করতে আপত্তি নাই। কিন্তু সেই ডেট হতে হবে আমার হরতাল শেষ হওয়ার পর।

শেখ হাসিনা: আপনার হরতাল প্রত্যাহার করবেন না?

খালেদা জিয়া: না, আমি হরতাল প্রত্যাহার করতে পারব না। এটা তো আমার ডিসিশন না। এটা ১৮ দলের ডিসিশন। আমি এটা কী করে একলা করব।

শেখ হাসিনা: আপনি ১৮ দলকে ডেকে নিয়ে বলেন...

খালেদা জিয়া: এখন সময় নাই। আপনি যে তাড়া করতেছেন। এখন তো খুঁজে পাওয়া যাবে না লোকজনকে। আপনি তো সবার পেছনে পুলিশ লাগিয়ে রেখেছেন। কী করে মানুষ পাওয়া যাবে, বলেন?

শেখ হাসিনা: আমরা পুলিশ লাগিয়ে রাখব কেন?

খালেদা জিয়া: আপনি লাগিয়ে রাখবেন না তো কে রাখবে? পুলিশ...কার কথায়... কি আমার কথায় চলে? আপনি তো সবার বাসায় বাসায় রেড করছেন। বস্তি থেকে পর্যন্ত আপনি লোক ধরে নিয়ে যাচ্ছেন।

শেখ হাসিনা: যেখানে বোমা বার্স্ট হয়ে যাবে...

খালেদা জিয়া: বোমা ব্লাস্ট হয়ে যাবে। বোমা ব্লাস্ট তো আপনারা করেন আর নাম দেন আমাদের। এগুলো তো আপনাদের পুরাতন ঐতিহ্য।

আমি বলতে চাই, যদি আপনারা ২৯ তারিখের পরে করেন আমি রাজি আছি। আমি নিশ্চয় কথা বলতে রাজি আছি।

শেখ হাসিনা: আপনি আলটিমেটাম দিলেন দুই দিনের। এখন আমি দুই দিনের মধ্যেই ফোন করলাম। অথচ এখন হরতাল ও করবেন আবার বলছেন ২৯ তারিখের পরে। আপনি কী বক্তৃতা দিলেন আর আজকে এখন কী বলছেন, আপনি একটু ভেবে দেখেন।

খালেদা জিয়া: আমি বলেছি আলোচনা চলুক, কর্মসূচিও চলবে।

শেখ হাসিনা: আপনি নিজেই বলছেন দুই দিনের মধ্যে আলোচনা...হরতাল দিবেন না।...শুনেন আমার কথা...আমার এখানে ক্যামেরা নাই...

খালেদা জিয়া: আমার এখানে ক্যামেরা টেমেরা নাই। আমি নিজেই কথা বলছি। আমি বাসায় বসে কথা বলছি। অফিসে হলে আমার জন্য সুবিধা হতো। ক্যামেরা টেমেরা থাকত। টেলিভিশনে দেখব আপনারাই ক্যামেরা দেখাচ্ছেন।...যে বলেছে...টেলিভিশনে স্ক্রল দিয়েছে যে ওনার রেড টেলিফোন ঠিক আছে। আমি এটা দেখতে চাই।

শেখ হাসিনা: আমি খবর নিলাম। ফোন ঠিক আছে। ১০-১২ বার ফোন করেছি।

খালেদা জিয়া: ফোন ঠিক নাই। তাহলে বলতে চান আমরা কেউ ফোনে শুনছি না। ফোন বাজে আমরা কেউ শুনি না।

শেখ হাসিনা: আমি কানে শুনব কি করে। গ্রেনেড হামলায় তো আমার এক কান এমনিতেই নষ্ট। ...ফোন আমি নিজে করেছি।

খালেদা জিয়া: আপনি নিজে করলে কী হবে। আপনি একটা ডেড ফোনকে... আপনি বলেছেন আপনি ফোন করেছেন।

শেখ হাসিনা: ফোন রিং হচ্ছিল

খালেদা জিয়া: রিং হবে কী করে। যে ফোন ডেড, সেটা রিং হবে কী করে। এটাই তো মন-মানসিকতার পরিচয়। আপনি কি সত্যি কথা বলছেন কি না।

শেখ হাসিনা: আমি সত্যি কথা বলছি। মিথ্যা বলার কিছু নেই...

খালেদা জিয়া: আমি কাল পর্যন্ত চেক করেছি। আপনি করতে পারেন।...ফোন চেক করে রিপোর্ট করেছি। আপনারা...লোকজন...কেউ আসেন। তারা তো আমাদের মানুষ বলে মনে করে না। কাজেই আসেও না, টেলিফোন ঠিক করা গরজও বোধ করে না। রেড টেলিফোন কেন? আজকাল তো মোবাইল ফোন আছে, টিঅ্যান্ডটি আছে...

শেখ হাসিনা: রেড টেলিফোনের দোষ দিয়ে খামাখা মিথ্যা বলার তো দরকার নেই।

খালেদা জিয়া: মিথ্যে বলব কিসের জন্য। যে টেলিফোন ডেড। তো ডেডকে ডেড বলবই তো। আপনি বললে তো হবে না যে ফোন বিজি ছিল। এটা বললে কেউ বিশ্বাস করবে না

...........

শেখ হাসিনা: এক্সচেঞ্জে কালকে খবর নেওয়াই যাবে। এটা কোনো ব্যাপার না।

খালেদা জিয়া: কিন্তু আপনার গুলশান এক্সচেঞ্জ থেকে যে বলেছে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ সে সত্য কথাটা বলেনি।

শেখ হাসিনা: রেড টেলিফোন কিন্তু আলাদা এক্সচেঞ্জ। আরও ভালো করে জানবেন।

খালেদা জিয়া:: আলাদা এক্সচেঞ্জই। টেলিভিশন স্ক্রল দিছে। আপনি নিজে সামনে থাকলে দেখতেন।

শেখ হাসিনা: আমি গণভবনের অফিসে বসে আছি। আমার অফিসে কোনো টেলিভিশন নেই।

খালেদা জিয়া: তাহলে কেন বলা হচ্ছে, টেলিফোন ঠিক আছে।

শেখ হাসিনা: আপনার শিমুল বিশ্বাসের সাথে কথা হয়েছে...

খালেদা জিয়া: আপনার সঙ্গে কথাই ছিল যে এই টেলিফোনে কথা হবে আমাদের। আমি তো বসে আছি এখানে। আধা ঘণ্টা বসে আছি যে আপনার টেলিফোন আসবে। আমরা তো গোপন কিছু বলব না। একসময় আমরা অনেক কথা বলেছি। এরশাদবিরোধী আন্দোলনে একসঙ্গে কাজ করেছি। কেন কথা বলব না। এখনো বলতে চাই, কাজ করতে চাই। আসুন দেশের...

শেখ হাসিনা: আগামী ২৮ তারিখ আসেন। আমরা আলোচনা করি।

খালেদা জিয়া: না, আমি ২৮ তারিখ যেতে পারব না। আপনি যদি সত্যি আন্তরিক হন, ২৯ তারিখের পর ডেট দেন। আমি আসব।

শেখ হাসিনা: আপনি কালকে বললেন...

খালেদা জিয়া: না, আমি কর্মসূচি দিয়ে ফেলেছি। এখন সম্ভব না।

শেখ হাসিনা: আপনি নিজেই বলেছেন, দুই দিনের মধ্যে আলোচনার জন্য না ডাকলে হরতাল দেবেন।

খালেদা জিয়া: আমি হরতাল দিয়ে ফেলেছি। তার আগে বলা উচিত ছিল।

শেখ হাসিনা: আপনি আপনার বক্তব্যটা আবার শুনেন।

খালেদা জিয়া: হ্যাঁ, এখন আমি নিজে শুনলেও কর্মসূচি দিয়ে ফেলেছি। সঙ্গে সঙ্গেই বলেছি, কর্মসূচিও চলবে, আলোচনাও চলবে।

শেখ হাসিনা: আপনি যেহেতু বললেন দুই দিনের মধ্যে...

খালেদা জিয়া: আমি বলেছি। কর্মসূচি-সংলাপ একসঙ্গে চলবে।

শেখ হাসিনা: এর আগেই আমি ফোন করলাম।

খালেদা জিয়া: না, হরতাল চলবে। কর্মসূচি ঠিক হয়ে গেছে। ১৮ দলের সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ১৮ দল পাব কোথায় এখন? এখন কেউ নেই।

শেখ হাসিনা: ১৮ দল আপনি পাবেন, ডাকলেই পাবেন। আপনি ডাকলে হবে না, এটা কোনো কথা হলো নাকি। এটা কেউ বিশ্বাস করবে না।

খালেদা জিয়া: বিশ্বাস করবে না ঠিক আছে। আমি ডাকলে হতো। কিন্তু এখন হবে না, এই কারণে...

শেখ হাসিনা: আপনি বললেন, দুই দিনের মধ্যে আলোচনা না করলে আপনি হরতাল দেবেন। এ সময়ের মধ্যেই আপনাকে ফোন করলাম।

খালেদা জিয়া: না, আপনি যদি কাল রাতেও যদি আপনি ফোন করতেন, তাহলে কর্মসূচি বিবেচনা করা যেত। পুরো রাত চলে গেছে। সকালে অফিসে চলে গেছি।

শেখ হাসিনা: রাতে ফোন না দিলে তো আপনার হয় না। আমি রাত জাগি না।

খালেদা জিয়া: আপনি কি সন্ধ্যার সময় ঘুমিয়ে পড়েন?

শেখ হাসিনা: আমি নামাজ পড়ি...

খালেদা জিয়া: আমি জানি। আপনি নামাজ পড়েন, কোরআন পড়েন... করেন। সবই জানি।...

শেখ হাসিনা: আপনি যে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন আমি ঠিক সেই সময়ের মধ্যেই আপনাকে ফোন করেছি আলোচনার জন্য।

খালেদা জিয়া: এখন আমার দলের কোনো নেতাকে পাব না, কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের পাব না, ১৮ দলের নেতাদের পাব না, কার সাথে কথা বলে আমি এটা প্রত্যাহার করব, আপনি বলেন?  

শেখ হাসিনা: আপনি কাউকে পাবেন না—এটা একটা কথা হলো? আপনি হুকুম দিলেই তো সব হবে।

খালেদা জিয়া: আরে আপনার ডিবি, এসবি তো আমার বাড়ি ঘেরাও করে রেখেছে। আমার নেতারা কি করে আসবে বলেন?

শেখ হাসিনা: আপনারা ছুরি-কাঁচি-দা-কুড়াল নিয়ে মানুষকে আক্রমণ করার কথা বলছেন।

খালেদা জিয়া: ছুরি-কাঁচি-দা-কুড়াল নিয়ে তো আপনারা করেন। বিশ্বজিেক আপনার লোকজন দা দিয়ে হত্যা করল না?

শেখ হাসিনা: আমার লোকজন না। যারা করেছে তারা অনেক আগে থেকেই বহিষ্কৃত। আমরা তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করেছি।

খালেদা জিয়া: আমি আপনাকে আবার রিকোয়েস্ট করছি, ২৯ তারিখের পর আপনি সময় দেন, আমি আলোচনায় রাজি আছি। এখন এই কর্মসূচি থেকে বেরোনোর কোনো পথ নেই। আপনি ৩০ তারিখে ডাকেন, আমি যাব।

শেখ হাসিনা: আপনি জনগণের সামনে, জাতির সামনে যে বক্তব্যটা দিয়েছেন, সেটা অনুসরণ করেন। হরতাল প্রত্যাহার করেন।

খালেদা জিয়া: সেটা করার পথ আর খোলা নেই এখন। টাইম ওভার হয়ে গেছে। আপনি যদি কাল রাতেও ফোন করতেন, আমি রাতেই মিটিং ডাকতাম। 

শেখ হাসিনা: আপনি দুই দিন সময় দিয়েছিলেন। আমি দুই দিনের মধ্যেই আপনাকে ফোন করেছি।

খালেদা জিয়া: আপনি কি মনে করছেন এই হরতালেই আমাদের কর্মসূচি শেষ হয়ে যাবে!