ফেলানী হত্যা মামলা ভারতের সুপ্রিম কোর্টে গৃহীত

ফেলানীর হত্যা মামলা ভারতের সুপ্রিম কোর্টে গৃহীত হলো। আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির আদালতে এই মামলার প্রথম শুনানি হয়। আবেদনকারীদের আরজি অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্ট ভারত সরকার, পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ভারতের সীমান্ত নিরাপত্তারক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও সিবিআইকে নোটিশ পাঠানোর নির্দেশ দেয়। রিট আবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৩ এবং ২০১৫ সালে বিএসএফের তদন্তের রায় বাতিল করে সিবিআই অথবা কোনো নিরপেক্ষ সংস্থাকে দিয়ে ফেলানী–হত্যার তদন্ত করানো হোক।

ফেলানী খাতুনের বাবা মহম্মদ নূর ইসলাম, বাংলার মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের (মাসুম) পক্ষে এই রিট আবেদন দাখিল করা হয়। প্রধান বিচারপতি এইচ এল দাত্তু, বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও বিচারপতি অমিতাভ রায়ের এজলাসে আজ বিকেলে মামলাটির প্রথম শুনানি হয়। আবেদনকারীর পক্ষের আইনজীবী কলিন গনজালভেসের আরজি ছিল, বিএসএফের নিজস্ব তদন্তে ফেলানীর হত্যাকারী অমিয় ঘোষকে দুবার নির্দোষ বলা হয়েছে। কলিন গনজালভেস আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘‘আমরা দাবি জানিয়েছি, ফেলানী-হত্যার তদন্ত সিবিআই বা ওই জাতীয় কোনো নিরপেক্ষ সংস্থাকে দিয়ে করানোর নির্দেশ দেওয়া হোক। সেই দাবি অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি সংশ্লিষ্টদের নোটিশ পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।”

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া পার হওয়ার সময় বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের গুলিতে নিহত হয় কিশোরী ফেলানী। তার লাশ দীর্ঘ সময় ঝুলে থাকে কাঁটাতারের বেড়ায়। এই হত্যাকাণ্ডের ছবি দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হলে বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিএসএফের বিশেষ আদালত ২০১৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর অমিয় ঘোষকে বেকসুর খালাস দেন। এরপর গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর ফেলানী হত্যার পুনর্বিচার শুরু হয় এবং গত ২ জুলাই সেই বিচারের রায়েও অমিয় ঘোষকে নির্দোষ ঘোষণা করা হয়।

তবে ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম গত ৮ জুলাই আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) মাধ্যমে ভারতের মানবাধিকার সংগঠন বাংলার মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের (মাসুম) সম্পাদক কিরীটী রায়ের কাছে ন্যায়বিচারের কার্যকর উদ্যোগ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করে একটি আবেদন করেন।

মাসুম-এর সম্পাদক কিরীটী রায় আজ সন্ধ্যায় কলকাতা থেকে ফোনে প্রথম আলোকে জানান, ‘‘আট-দশদিন আগে আমরা রিট আবেদনটি দাখিল করি। সুপ্রিম কোর্ট মামলাটি গ্রহণ করায় এবং নোটিশ পাঠানোর নির্দেশ দেওয়ায় আমরা সন্তুষ্ট। ফেলানীর পরিবার এবার ন্যায়বিচার পাবেন বলে আমরা আশা করছি।”