ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মা ও শিশুসন্তানের লাশ উদ্ধার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শ্বশুরবাড়ি থেকে এক গৃহবধূ ও তাঁর তিন মাস বয়সী এক ছেলেশিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পারিবারিক কলহের জেরে শিশুকে হত্যার পর এ গৃহবধূ আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে নাসিরনগর উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের আশুরাইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। মা ও শিশুর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই গৃহবধূর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক।
নিহত দুজন হলেন আশুরাইল গ্রামের বড়বাড়ির মৃত আবিদ মিয়ার ছেলে দুবাইপ্রবাসী নূর ইসলামের স্ত্রী ফারজানা বেগম (২২) ও তাঁর ছেলে শফিকুল ইসলাম ওরফে তানভির।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শাহরিয়ার আল মামুন গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা ধারণা করছেন, শিশুটিকে হত্যার পর মা আত্মহত্যা করেছেন। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।
বুড়িশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য দুলু মিয়া জানান, নূর ইসলামের বাড়ির উঠানে পেয়ারাগাছে ঝুলন্ত অবস্থায় ফারজানার ও ঘরের বিছানা থেকে শিশু শফিকুলের লাশ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চার বছর আগে গোকর্ণ ইউনিয়নের নূরপুর গ্রামের আব্বাস খাঁর মেয়ে ফারজানার সঙ্গে বুড়িশ্বর ইউনিয়নের আশুরাইল গ্রামের বড় বাড়ির নূর ইসলামের প্রেমের সম্পর্ক থেকে বিয়ে হয়। নূর ইসলাম ও ফারজানা খালাতো ভাইবোন। দুই মাস আগে নূর ইসলাম দুবাই থেকে ছুটি নিয়ে দেশে ফেরেন। আজ শনিবার তাঁর দুবাই ফিরে যাওয়ার কথা ছিল।
বৃহস্পতিবার ফারজানা স্বামীকে দুবাই যেতে নিষেধ করেন। কিন্তু নূর ইসলাম তাঁর যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল থাকেন। এ নিয়ে রাতে তাঁদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। নূর ইসলামের বড় ভাই আলাল উদ্দিন সকালে নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় উঠানে ফারজানার ঝুলন্ত লাশ দেখে চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন জড়ো হন। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাদের প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদন করার সময় দেখা গেছে শিশুটির ঘাড়ের এক পাশে কালো দাগ রয়েছে।