হবিগঞ্জ স্টেডিয়াম নির্মাণ ২২ বছরেও শেষ হয়নি

২২ বছরেও শেষ হয়নি হবিগঞ্জ আধুনিক স্টেডিয়ামের নির্মাণকাজ। ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী দুই দফায় প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে কাজের মান ও ধীরগতি দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ ক্রীড়া পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, এ প্রকল্পের মেয়াদ ছিল গত জুন মাস পর্যন্ত। কাজের ধীরগতির কারণে সময় ছয় মাস বাড়ানো হয়। কিন্তু কাজের অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। মোট কাজের তিন ভাগের দুই ভাগ এখনো বাকি। অথচ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেঘনা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. শাহজাহান মিয়া ১৭ কোটি টাকার এ কাজের অর্ধেকই তুলে নিয়েছেন। মো. শাহজাহান মিয়া লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।
সূত্র আরও জানায়, বিএনপি ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় আসার পর ওই স্টেডিয়াম নির্মাণের কাজ পায় ছাত্রদলের সাবেক নেতা হাবিব-উন-নবীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে সামান্য মাটি ভরাটের কাজ করে পুরো বিল তুলে নিয়ে যায় তারা। এ অবস্থায় কাজ বন্ধ থাকে।
গত বছরের ১০ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় দরপত্র আহ্বান করে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। এতে কাজ পায় মেঘনা এন্টারপ্রাইজ। এই প্রকল্পের শুধু মাটি ভরাটের জন্য বরাদ্দ রাখা হয় দুই কোটি টাকা। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাত্র ১০ লাখ টাকার মাটি ভরাট করে কাজ বন্ধ রাখে। গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শিবনাথ রায় প্রকল্প এলাকা ঘুরে হতাশ হন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ না হলে প্রকল্পের টাকা ফেরত যাবে।
এলাকার অনেকে অভিযোগ করেন, স্টেডিয়াম নির্মাণে নিম্নমানের ইট, বালু, রড ও সিমেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে।
এক প্রকৌশলী জানান, স্টেডিয়ামের অবকাঠামোগত দিক মজবুত বা ভিত তৈরি না করেই নির্মাণকাজ শুরু করা হয়েছে। এ ছাড়া এতে মানসম্মত উপকরণ ব্যবহূত হচ্ছে না। জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন জানান, নিয়ম রয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে। বাস্তবে দেখা গেছে, তারা প্রকল্পের নকশা ও প্রকৃত তথ্য গোপন করে এ কাজ করছে।
স্টেডিয়াম প্রকল্পের পরিচালক শাহাদাত হোসেনের দাবি, মোট কাজের ৫০ শতাংশ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঠিকাদার কাজ শেষ করতে পারবেন বলে আমি আশাবাদী।
এ ব্যাপারে কথা বলতে যোগাযোগের চেষ্টা করেও শাহজাহান মিয়ার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।