প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীর যৌন হয়রানির অভিযোগ

বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার ডেরাহার উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মুঠোফোনে উত্ত্যক্ত করা ও যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছে ওই বিদ্যালয়েরই মাধ্যমিক স্তরের এক ছাত্রী। 

আজ বুধবার ওই ছাত্রী থানায় হাজির হয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মুঠোফোনে উত্ত্যক্ত ও যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগ করে।
এদিকে, ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বিদ্যালয় ঘেরাও করে প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে।
আজ বেলা ১১টার দিকে ডেরাহার উচ্চবিদ্যালয় চত্বরে বিক্ষোভের মুখে ওই প্রধান শিক্ষক আত্মগোপন করেন।
নন্দীগ্রাম থানায় দাখিল করা ওই ছাত্রীর অভিযোগ, কয়েক মাস ধরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহুরুল ইসলাম কারণে-অকারণে মুঠোফোনে তাকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। একপর্যায়ে ওই শিক্ষক তাকে মুঠোফোনে অশ্লীল ও আপত্তিকর প্রস্তাব দেন।
ওই ছাত্রীর অভিযোগ, ‘পরীক্ষায় ভালো নম্বর ও অর্থের লোভ দেখিয়ে হেড স্যার অশ্লীল প্রস্তাব দেন। তাতে রাজি না হলে তিনি বিয়ের প্রস্তাব দেন। তাতেও কাজ না হলে তিনি মুঠোফোনে অশ্লীল ও আপত্তিকর কথাবার্তা বলেন। অতিষ্ঠ হয়ে তাঁর কথা বার্তা মুঠোফোনে রেকর্ড করি।’
নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামিম কামাল বলেন, ‘মেয়েটি তার অভিভাবকদের কাছে প্রধান শিক্ষক জহুরুল ইসলামের কুকীর্তি ফাঁস করে দিলে তা এলাকায় জানাজানি হয়। একপর্যায়ে অভিভাবক, এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা আজ বিদ্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করতে থাকে। খবর পেয়ে থানা-পুলিশ পৌঁছে দোষী শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে বিক্ষুব্ধ জনতা শান্ত হয়।’
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে সহকারী পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান প্রথম আলোকে জানান, প্রাথমিক তদন্তে প্রধান শিক্ষক জহুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত ও মুঠোফোনে যৌন হয়রানির অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। ইতিমধ্যেই ছাত্রীর সঙ্গে মুঠোফোনে অশ্লীল কথাবার্তার রেকর্ড পুলিশ হাতে পেয়েছে। মেয়েটি থানায় এসে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছে। কিন্তু তার আগেই এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে জহুরুল ইসলাম আত্মগোপন করেছেন। তাঁকে আটকের চেষ্টা করছে পুলিশ।
নিজের বিরুদ্ধে আনা ছাত্রীর অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘মিথ্যে কলঙ্ক রটিয়ে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।’
এ ব্যাপারে নন্দীগ্রাম উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোতাহার হোসেন জানান, তথ্যপ্রমাণ পেলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।