গুলিতে দুই পাহারাদার নিহত, আহত ১০

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের দুলাইন বিলের দখল নিয়ে দুই পক্ষে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে বিলের পাহারাদার দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন। গতকাল শনিবার বিকেলে দুলাইন বিল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিরা হচ্ছেন কোম্পানীগঞ্জের বাতুমারা গ্রামের আবদুল খালেক (৫০) ও নোয়াগাঁও গ্রামের শেখ ফরিদ মিয়া (৪৫)। সংঘর্ষের পর নিহত দুজনের মধ্যে একজনের মরদেহ প্রতিপক্ষের লোকজন নিয়ে যায়। ঘটনার প্রায় দুই ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধারের চেষ্টা করছে। অপরজনের মরদেহ সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও বিলের ইজারাদার দাবিদার দুই পক্ষের লোকজনের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ১২ নম্বর সালদিঘারকান্দি মৌজার ১২৮ একর আয়তনের ‘ছোট দুলাইন সিংগাইর’ নামের জলমহাল বন বিভাগ ইজারা দেয়। ‘পাইল ফিশিং’ (তিন বছর পর মাছ আহরণ) পদ্ধতির এ জলমহাল ২০১২ সালে বন বিভাগ তোরাব আলী পক্ষকে ইজারা দেয়। অপর দিকে শিমুলতলা-নোয়াগাঁও অগ্রগামী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি নামে আরেকটি পক্ষ উপজেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির মাধ্যমে ইজারা নিয়েছে বলে দাবি করে।
এবারের মাছ ধরা মৌসুমে দুই পক্ষ জলমহালের বৈধ ইজারাদার দাবি করে দখল তৎপরতা শুরু করে। গত সোমবার তোরাব আলীর পক্ষ জলমহালের দখল নিলে অপর পক্ষ বিতাড়িত হয়। গতকাল বেলা তিনটার দিকে মৎস্যজীবী সমিতির লোকজন সেখানে গেলে সংঘর্ষ বাধে। এতে এক পক্ষের গুলিতে ঘটনাস্থলে বাতুমারা (শালদীঘা) গ্রামের শেখ ফরিদ ও নোয়াগাঁও গ্রামের আবদুল খালেক নিহত হন। নিহত দুজন জলমহালের পাহারাদার ছিলেন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষে আহত হয়েছেন আরও ১০ জন। এদের মধ্যে বন্দুকের ছররা গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাঁচজনকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুজন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রাতে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, দুলাইন বিলের ইজারাদার দাবিদার দুটি পক্ষ ছিল। এক পক্ষ বন বিভাগ এবং অপর পক্ষ উপজেলা জলমহাল কমিটির কাছ থেকে বিল ইজারা নিয়ে দখল তৎপরতা চালাতে গিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে পুলিশ জলমহাল এলাকায় অবস্থান নিয়ে দুই পক্ষে সংঘর্ষকারী ও গুলিবর্ষণকারীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে।
শিমুলতলা নোয়াগাঁও অগ্রগামী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি আবদুল হক সরকার দাবি করেন, তোরাব আলীসহ তাঁর পক্ষের বন্দুকধারীদের গুলিতে দুজন নিহত হয়েছেন। তবে রাতে তোরাব আলী প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, তিনি জলমহালে ছিলেন না। তবে শুনেছেন দখল করতে এসে তাঁর পক্ষের লোকজনের ওপর হামলা হয়েছে। জলমহাল দখল প্রতিরোধ করতে গিয়ে এলাকাবাসী বাধা দিলে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটলে হতাহতের ঘটনা ঘটে।