ইরাকে বৈধ হতে পারবেন অবৈধ বাংলাদেশিরা

অবৈধভাবে বসবাসরত শ্রমিকদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছে ইরাক। ইরাকের বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং প্রবাসী বাংলাদেশিরা এসব তথ্য জানিয়েছেন।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ জন্য এক মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে বলেছে, আগামী ৩ ডিসেম্বরের মধ্যে যাঁরা বৈধ হতে পারবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে।
ইরাকের বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, দেশটির সব কোম্পানি, হোটেল, রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠানে ৩ নভেম্বর এ-সংক্রান্ত চিঠি দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বিদেশি শ্রমিকদের নাম, জাতীয়তা, পাসপোর্ট নম্বর, কী ধরনের কাজ করেন, কোথায় কাজ করেন, যার অধীনে চাকরি করেন—সেসব ব্যাপারে তথ্য দিতে হবে। প্রতিটি প্রদেশে আলাদাভাবে নিবন্ধন করা হবে। এ ছাড়া অবৈধ ব্যক্তিদের কাজের অনুমতিপত্র পাওয়ার জন্য শ্রম মন্ত্রণালয় ও কর্মসংস্থান অধিদপ্তরে যোগাযোগ করতে হবে।
ইরাকে অবৈধভাবে কত বাংলাদেশি আছেন, সে বিষয়ে সরকারের কাছে কোনো পরিসংখ্যান নেই। ইরাকপ্রবাসীরা বলছেন, এই সংখ্যা ২০ থেকে ২৫ হাজার। তবে ইরাকের বাংলাদেশ দূতাবাস বলছে, এ সংখ্যা পাঁচ থেকে আট হাজার।
জানতে চাইলে ইরাকের বাংলাদেশ দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ও কাউন্সেলর (শ্রম) জিয়াদুর রহমান গত বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইরাক সরকার যে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছে, সেটি বাংলাদেশিদের জন্য বিরাট একটি সুযোগ।’
একসময় বাংলাদেশের অন্যতম শ্রমবাজার ছিল ইরাক। কিন্তু ১৯৯১ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধের কারণে কর্মীরা চলে আসেন এবং লোক পাঠানোও বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধের সাত বছর পর ২০১০ সালের জানুয়ারিতে ফের আনুষ্ঠানিকভাবে ইরাকে বাংলাদেশের দূতাবাস চালু হয়। এ বছরের ৩১ আগস্ট দুই দেশের মধ্যে কর্মী নেওয়ার ব্যাপারে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) সূত্রে জানা গেছে, ওই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পরপরই ইরাকে বাংলাদেশ থেকে কর্মী যাওয়া বাড়তে থাকে। এ বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যেখানে মাসে গড়ে মাত্র ৪০০ কর্মী ইরাকে গেছেন, সেখানে গত অক্টোবর মাসে দুই হাজার ১১৯ জন কর্মী ইরাকে গেছেন।
ইরাকের শ্রমবাজারের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে জিয়াদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আশা করছি, সাধারণ ক্ষমার প্রক্রিয়া শেষ হলে সামনে আরও কর্মী যাবেন।’