জগাখিচুড়ি মার্কা নির্বাচনের শঙ্কা

আসন্ন পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচন হবে দলীয় প্রতীকে আর নির্দলীয়ভাবে হবে কাউন্সিলর পদে। এমন আইনের কারণে পৌরসভার মতো স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ স্তরে জগাখিচুড়ি একটা নির্বাচন হতে যাচ্ছে—এমনটাই মনে করছেন বগুড়ার বিএনপি-সমর্থিত বর্তমান মেয়র এবং দলটির সম্ভাব্য প্রায় সব প্রার্থী। মনোনয়ন নিয়ে বাণিজ্য ও পেশিশক্তির প্রদর্শন হবে বলেও আশঙ্কা তাঁদের।
তবে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা বলছেন, বিশ্বের সব গণতান্ত্রিক দেশের মতো স্থানীয় সরকারে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত গণতন্ত্রের পক্ষে আরও এগিয়ে যাওয়ার নমুনা। মনোনয়নে দলের নিয়ন্ত্রণ কঠোর থাকায় এ নিয়ে বাণিজ্যেরও কোনো আশঙ্কা নেই বলে তাঁদের অভিমত।
বগুড়া পৌরসভার মেয়র ও জেলা বিএনপির উপদেষ্টা মাহবুবর রহমান মনে করেন, দলীয়ভাবে মেয়র নির্বাচন হওয়ায় নির্দলীয় ও জনসেবায় আগ্রহী ব্যক্তিরা এখানে আসতে নিরুৎসাহিত হবেন।
এবারের পৌর নির্বাচন জগাখিচুড়ি মার্কা হবে—এমন অভিমত বগুড়ার গাবতলী পৌরসভার বর্তমান মেয়র এবং বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী সাইফুল ইসলামের। তিনি বলেন, দ্বৈতনীতির নির্বাচনে বেরিয়ে আসা পৌর পরিষদও হবে জগাখিচুড়ি মার্কা পরিষদ। এতে মেয়র-কাউন্সিলরদের মধ্যে বিরোধ বাড়বে। দুই পক্ষের মধ্যে সম্পর্ক হবে সাংঘর্ষিক।
নন্দীগ্রাম পৌরসভার বর্তমান মেয়র ও বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী সুশান্ত কুমার প্রথম আলোকে বলেন, মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে অংশগ্রহণের বিধান রাখা কোনোভাবেই ঠিক হয়নি। এই পরিষদ স্থানীয় সরকার শক্তিশালী করার চেয়ে জটিলতা সৃষ্টি করবে।
জেলার পৌরসভাগুলোতে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে সবাই বর্তমান ধারায় নির্বাচনের বিরুদ্ধে থাকলেও একজন বললেন একেবারে উল্টো কথা। তিনি নন্দীগ্রাম পৌর বিএনপির সভাপতি আহসান বিপ্লব রহিম। তিনি বললেন, দলীয়ভাবে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত খুবই ইতিবাচক। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হতে পারবেন না। এতে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কোনো আশঙ্কা নেই। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কারও যাওয়ার সুযোগ নেই।
বগুড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র ও এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী রেজাউল করিম বলেন, ‘প্রায় সব গণতান্ত্রিক দেশের মতো স্থানীয় সরকারে দলীয় নির্বাচনে আমাদের গণতান্ত্রিক ধারা আরও পোক্ত হবে।’
কাহালু পৌরসভার মেয়র ও এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী হেলালউদ্দিন কবিরাজ বলেন, স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন সরকারের সাহসী পদক্ষেপ। স্থানীয় উন্নয়নে এর সুফল পাওয়া যাবে।