সৎ, যোগ্য প্রার্থীকে ভোট

শেরপুর পৌরসভার ভোটাররা সৎ ও যোগ্য মেয়র প্রার্থীকে ভোট দেবেন। তাঁদের যুক্তি হচ্ছে, এমন প্রার্থী নিজের জন্য নয়, জনগণের উন্নয়নের জন্য কাজ করবেন। পৌরসভার সব সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করবেন।
গতকাল মঙ্গলবার পৌরসভার বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার ভোটারদের সঙ্গে কথা বললে তাঁদের কাঙ্ক্ষিত মেয়র প্রার্থী সম্পর্কে তাঁরা এসব কথা বলেন। অনেকে সুষ্ঠু পরিবেশে নির্বাচন হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।
শহরের গোপালবাড়ী এলাকার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা আবদুল খালেক বলেন, ‘দলীয় নির্বাচন হিসেবে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলের প্রার্থীই যোগ্যতাসম্পন্ন। তার মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া ওরফে লিটন সাবেক মেয়র। বিএনপির প্রার্থী আবদুর রাজ্জাক আশীষও জনপ্রিয়। তাঁর পক্ষেও অনেকের সমর্থন আছে। আমরা চাই নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হোক, যাতে সবাই নির্বিঘ্নে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন এবং তাঁদের পছন্দের প্রার্থী বেছে নিতে পারেন।’
গতকাল শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় পৌর নির্বাচন নিয়ে এখন জনমনে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। শহরে বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে ভোট চেয়ে মাইকে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। প্রার্থী ও তাঁদের কর্মী-সমর্থকেরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন।
শেরপুর শহরের শিববাড়ী এলাকার বাসিন্দা পলাশ কুমার দে বলেন, ‘স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তিকে অর্থাৎ স্বাধীনতার পক্ষের প্রার্থীকে আমরা সমর্থন দেব। অবশ্যই তাঁকে সৎ, নির্ভীক ও নিষ্ঠাবান হতে হবে। তাঁর কাছে আমরা আশা করব তিনি যেন নির্বাচিত হয়ে শেরপুর পৌরসভার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখেন।’
শহরের গোপালবাড়ী এলাকার মো. আসিফুল ইসলাম নতুন ভোটার হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘জীবনে কোনো গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে প্রথমবার ভোট দেব—এটা ভেবে খুব উৎফুল্ল লাগছে। তবে যে প্রার্থী সৎ, যোগ্য এবং যিনি পৌরবাসী তথা জনগণের উন্নয়নের জন্য কাজ করবেন, নিজের জন্য নয়—এমন প্রার্থীকেই ভোট দেব।’
শেরপুর সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক শহরের কালীর বাজার এলাকার বাসিন্দা শিব শংকর কারুয়া বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করেন এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে যিনি শেরপুরকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন—এমন প্রার্থীকেই আমরা মেয়র হিসেবে দেখতে চাই। তাঁর কাছে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে তিনি শিশুদের জন্য একটি সুন্দর শিশু পার্ক ও বইপ্রেমীদের জন্য পৌরসভার পক্ষ থেকে একটি গ্রন্থাগার গড়ে তুলবেন। এ ছাড়া উন্নত সড়ক যোগাযোগব্যবস্থাসহ শেরপুর পৌর শহরকে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন শহর হিসেবে গড়ে তুলবেন।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চন্দন কুমার পাল বলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাই শেরপুর পৌরসভার উন্নয়নধারা অব্যাহত রাখার জন্য নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করতে হবে।
শেরপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদুল হক বলেন, দীর্ঘ দুই দশক পর পৌর নির্বাচনের মাধ্যমে শেরপুরে ধানের শীষ প্রতীক পাওয়ায় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে বিপুল সাড়া জেগেছে।
জেলা প্রশাসক এ এম পারভেজ রহিম বলেন, অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু পরিবেশে পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কোনো প্রার্থীর পক্ষেই বিন্দুমাত্র দুর্বলতা দেখানোর সুযোগ নেই প্রশাসনের।