হাতিরঝিলে বাস চালু

রাজউক ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর (এসডব্লিউও) উদ্যোগে আজ হাতিরঝিল এলাকায় হাতিরঝিল চক্রাকার বাস সার্ভিসের শুভ উদ্বোধন করছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ছবি: সাহাদাত পারভেজ
রাজউক ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর (এসডব্লিউও) উদ্যোগে আজ হাতিরঝিল এলাকায় হাতিরঝিল চক্রাকার বাস সার্ভিসের শুভ উদ্বোধন করছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ছবি: সাহাদাত পারভেজ

দীর্ঘ প্রতীক্ষার শেষে রাজধানীর হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকায় কাঙ্ক্ষিত বাস সার্ভিস চালু হয়েছে। আজ বুধবার সকালে হাতির ঝিলে বেগুনবাড়ি পয়েন্টে এক অনুষ্ঠানে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন এই বাস সার্ভিসের উদ্বোধন করেন।

প্রাথমিক অবস্থায় ২৭ আসনের চারটি সাধারণ বাস নিয়ে এই সার্ভিস চালু হলো। এক মাসের মধ্যে আরও দুটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস এর সঙ্গে যোগ হবে। যাত্রী ওঠা-নামার জন্য প্রকল্প এলাকার ১০টি জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। টিকিট পাওয়া যাবে রামপুরা, মধুবাগ, এফডিসি মোড়, বৌবাজার, শুটিং ক্লাব ও মেরুল বাড্ডার ছয়টি কাউন্টারে।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের হাতিরঝিল প্রকল্পের পরিচালক জামাল আক্তার ভূঁইয়া বলেন, বাসের ন্যূনতম ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ টাকা। বাস ছাড়বে রামপুরা ব্রিজের গোড়া থেকে। সেখান থেকে মহানগর প্রজেক্ট ও মধুবাগ হয়ে হয়ে এফডিসি ক্রসিং পর্যন্ত ভাড়া ১৫ টাকা। আবার এফডিসি ক্রসিং থেকে বেগুনবাড়ি, কুনিপাড়া, পুলিশ প্লাজা এবং মেরুল বাড্ডা হয়ে রামপুরা পর্যন্ত একই ভাড়া কার্যকর হবে। যদি কোনো যাত্রী রামপুরা ব্রিজ থেকে বৃত্তাকার পথ ঘুরে আবার রামপুরায় যেতে চান, তাহলে তাঁকে ৩০ টাকা দিতে হবে। সকাল সাতটা থেকে বিরতিহীনভাবে রাত ১১টা পর্যন্ত এই বাস সার্ভিস চালু থাকবে।

রাজউক ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর (এসডব্লিউও) উদ্যোগে আজ হাতিরঝিল এলাকায় হাতিরঝিল চক্রাকার বাস সার্ভিসের শুভ উদ্বোধন করছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ছবি: সাহাদাত পারভেজ
রাজউক ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর (এসডব্লিউও) উদ্যোগে আজ হাতিরঝিল এলাকায় হাতিরঝিল চক্রাকার বাস সার্ভিসের শুভ উদ্বোধন করছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ছবি: সাহাদাত পারভেজ


হাতিরঝিল প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল রাজধানীর পূর্ব ও পশ্চিম অংশের মধ্যে যোগাযোগ সহজ করা। কিন্তু ২০১৩ সালের ২ জানুয়ারি প্রকল্পটি উদ্বোধনের পর প্রায় তিন বছর ধরে প্রকল্প এলাকার দুপাশের ১৬ কিলোমিটার রাস্তায় কোনো বাস অথবা মিনি বাস চলাচলের অনুমতি ছিল না। এতে এই এলাকার মধ্য দিয়ে যাতায়াতের ক্ষেত্রে তেজগাঁও, গুলশান, বাড্ডা, বনশ্রী, রামপুরা, নিকেতন, মধুবাগ, মহানগর প্রজেক্ট, উলন এবং মগবাজার এলাকায় বসবাসরতদের দুর্ভোগ ছিল নিত্যদিনের।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, হাতিরঝিল হয়ে উঠবে ঢাকাবাসীর আনন্দ আয়োজনের কেন্দ্রস্থল। ধীরে ধীরে গুলশান, বনানী ও বারিধারা লেককেও হাতিরঝিলের সংযুক্ত করা হবে। নির্মাণ করা হবে বেশ কিছু দৃষ্টিনন্দন সেতু, অপেরা হাউস, এম্ফিথিয়েটারসহ ফোয়ারা এবং ভাসমান রেস্তোরাঁ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আগে রামপুরা থেকে কারওয়ানবাজার যেতে ৪০ মিনিটের বেশি লাগত। এখন বাসে করে সেটা ১০ মিনিটেই সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন গণপূর্ত সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ, রাজউক চেয়ারম্যান জি এম জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া, প্রকল্প পরিচালক মেজর জেনারেল আবু সাঈদ মো. মাসুদ এবং পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) খন্দকার গোলাম ফারুক।
হাতিরঝিল প্রকল্পটি গড়ে উঠেছে ৩০২ একর জমির ওপর। রাজধানীর পূর্ব ও পশ্চিম অংশের মধ্যে যোগাযোগব্যবস্থাসহ বৃষ্টির পানি ও পয়োনিষ্কাশনের মাধ্যমে রাজধানীর একটি বড় অংশের জলাবদ্ধতা দূর করা, বৃষ্টি ও বন্যাজনিত পানি ধারণ, নগরের নান্দনিক সৌন্দর্য বাড়ানো ও সার্বিক পরিবেশের উন্নয়ন করাই এ প্রকল্পের লক্ষ্য।

হাতিরঝিলসহ তেজগাঁও এলাকায় ভাওয়ালের রাজার এস্টেটের অনেক ভূসম্পত্তি ছিল। এস্টেটের হাতির পাল এখানকার ঝিলে স্নান করতে বা পানি খেতে বিচরণ করত বলে কালক্রমে এর নাম হাতিরঝিল হয়।