বগুড়া ও জয়পুরহাটে দুই শিশুর লাশ উদ্ধার

বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় মাথায় আঘাত করে ১২ বছরের এক শিশুকে খুন করা হয়েছে। জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে অপহরণের তিন দিন পর আড়াই বছরের এক কন্যাশিশুর লাশ মিলেছে।
নিহত শিশু দুটি হলো নন্দীগ্রাম পৌর এলাকার ফোকপাল মহল্লার রেজাউল ইসলামের ছেলে রাজিকুল ইসলাম (১২) ও পাঁচবিবি উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের পরেশ চন্দ্র সরকারের একমাত্র মেয়ে আরাধ্যা রানী সরকার।
রাজিকুল উপজেলার বালিয়াগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল। উপজেলার সিধইল গ্রামসংলগ্ন শোলাগাড়ি খাড়ি থেকে গতকাল শনিবার তার লাশ উদ্ধার হয়। নন্দীগ্রাম থানা-পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার দুপুরের দিকে বাড়ির কাছে বাবার ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকে খেলতে যায় রাজিকুল। এ সময় সে ইজিবাইকসহ নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পরিবারের লোকজন তার কোনো খোঁজ পায়নি। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে শোলাগাড়ি খাড়িতে লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন থানায় খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান শামীম ইকবাল বলেন, রাজিকুলের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে। তবে কারা কী উদ্দেশ্যে হত্যা করেছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
পাঁচবিবি থানা-পুলিশ ও এলাকাবাসী বলেছেন, আরাধ্যাকে গত মঙ্গলবার দুপুরের দিকে বাড়ির পাশ থেকে অপহরণ করা হয়। ওই দিন বেলা ১টা ২৮ মিনিটে অপহরণকারীরা আরাধ্যার বাবা পরেশকে মুঠোফোনে ফোন দেয় অপহরণকারীরা। পরিবারের পক্ষ থেকে অপহরণকারীদের ওই মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করলে মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় আরাধ্যার বাবা মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পাঁচবিবি থানায় মামলা করেন। পুলিশ ও পরিবারের পক্ষ থেকে আরাধ্যাকে উদ্ধার করতে নানা তৎপরতা চালানো হয়। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি। পরে গত শুক্রবার ভোরে পরেশের বাড়ির ২০ গজ দূরে রশিদপুর মোলান বাজারের একটি পুকুরপাড়ে লোকজন আরাধ্যাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। খবর পেয়ে পাঁচবিবি থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ও জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
শিশু অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় কে বা কারা জড়িত তা এখনো পুলিশ উদ্ঘাটন করতে পারেনি। তবে এলাকা থেকে দুজনকে আটক করে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম বলেন, অপহরণের পর শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে। এ জন্য এটি অপহরণ ও হত্যা মামলা হিসেবে গণ্য করা হবে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শিশুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে শিশুটির মৃত্যুর ঘটনাটি পরিষ্কার হওয়া যাবে। এ ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।