সুষ্ঠু নির্বাচনে পরাজিতরাও খুশি

ঝিনাইদহের মহেশপুর পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপিসহ প্রতিদ্বন্দ্বী চার মেয়র প্রার্থী যে ভোট পেয়েছেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী একাই তার দেড় গুণেরও বেশি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এরপরও খুশি মহেশপুরের পরাজিত প্রার্থীরা। তাঁরা সবাই বলছেন, জয়-পরাজয় যা-ই হোক, এখানে ভোট সুষ্ঠু হয়েছে।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার ঝিনাইদহের চার পৌরসভায় নির্বাচন হয়। এর মধ্যে হরিণাকুণ্ডু পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহিনুর রহমান, কোটচাঁদপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহিদুল ইসলাম, শৈলকুপায় আওয়ামী লীগের কাজী আশরাফুল আজম ও মহেশপুরে আওয়ামী লীগের আবদুর রশিদ খান নির্বাচিত হন। কোটচাঁদপুর, শৈলকুপা ও হরিণাকুণ্ডুতে নির্বাচন নিয়ে নানা অভিযোগ উঠলেও মহেশপুরে কোনো প্রার্থী বা প্রার্থীর লোকজন কোনো অভিযোগ করেননি। সব দলই নির্বাচন নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
মহেশপুরে আওয়ামী লীগের আবদুর রশিদ খান পেয়েছেন ৯ হাজার ৮৭১ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী (জামায়াত) শহিদুল ইসলাম বিশ্বাস পেয়েছেন ২ হাজার ৯৮৮ ভোট। বিএনপির প্রার্থী নজিবউদ্দৌলা পেয়েছেন ৫৬১ ভোট, বিএনপির ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী বর্তমান মেয়র আমিরুল ইসলাম খান ওরফে চুন্নু পেয়েছেন ২ হাজার ২৭২ ভোট ও ইসলামী আন্দোলনের মাওলানা তাহাবুর রহমান পেয়েছেন ৫৪৯ ভোট। এই চার প্রার্থী মোট ৬ হাজার ৩৭০ ভোট পেয়েছেন।
নজিবউদ্দৌলা বলেন, দল তাঁকে মনোনয়ন দিলেও স্থানীয় নেতারা তাঁর বিপক্ষে কাজ করেছেন। যে কারণে তিনি ভোট পাননি। তবে ভোট সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই হয়েছে। আমিরুল ইসলাম খান বলেন, দল মনোনয়ন নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। যে কারণে বিএনপি ও বিএনপি ‘বিদ্রোহী’ সবাইকে ভোটাররা জবাব দিয়েছেন। তবে ভোট সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। ভোটের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় তাঁরা খুশি। মাওলানা তাহাবুর রহমান বলেন, ভোট সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। শহিদুল ইসলাম বিশ্বাস বলেন, ভোট শতভাগ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। ভোটে কোনো অনিয়ম, পক্ষপাতিত্ব ছিল না। তিনি মহেশপুরের নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত ছিলেন, তাঁদের ধন্যবাদ জানান।
পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার নজরুল ইসলাম বলেন, ‘তাঁরা ভোট নিয়ে নানা শঙ্কায় ছিলেন। কখনো ভাবেননি এত সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে ভোট হবে। তাঁরা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়েছেন। ভোট দিয়ে খুশিমনে বাড়ি ফিরেছেন। যাঁরা নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁরা তাঁদের ভোটেই হয়েছেন, এটা ভাবতেই ভালো লাগছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ঝিনাইদহ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সবার সহযোগিতার জন্য নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করা সম্ভব হয়েছে।