কোস্টগার্ডে বিদ্রোহ করলে মৃত্যুদণ্ড

বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের কোনো ব্যক্তি বাহিনীর অভ্যন্তরে বিদ্রোহের সূচনা করলে, বিদ্রোহে প্ররোচনা দিলে বা অংশ নিলে এবং বিদ্রোহের ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে তা দমনের ব্যবস্থা না নিলে সেই ব্যক্তি কোস্টগার্ড আদালত কর্তৃক মৃত্যুদণ্ডে বা অন্য কোনো আইনের অধীনে লঘুদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এ বিধান রেখে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড বিল ২০১৬ আজ সোমবার জাতীয় সংসদে উত্থাপিত হয়েছে। বিলটি আইনে পরিণত হলে বিদ্যমান কোস্টগার্ড আইন ১৯৯৪ বাতিল হয়ে যাবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বিলটি উত্থাপন করেন। উত্থাপনের পর বিলটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, কোস্টগার্ড বাহিনীতে একজন মহাপরিচালকসহ মোট ২১টি পদ থাকবে।

যুদ্ধাবস্থা বা অন্য কোনো বিশেষ প্রয়োজনে কোস্টগার্ডকে সহায়তা করার জন্য সরকার কাউকে তলব করে নিয়োজিত করলে ওই ব্যক্তি কোস্টগার্ডের কর্মকর্তা বা সদস্য হিসেবে গণ্য হবেন। নিয়োজিত অবস্থায় কোনো ব্যক্তি চাকরির শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

কোস্টগার্ডের কাজ হবে বাংলাদেশের জলসীমায় অনুপ্রবেশ, মানবপাচার, মাদকদ্রব্য ও চোরাচালান রোধ এবং অবৈধ মৎস্য আহরণ ইত্যাদি রোধ করা। কোনো ব্যক্তি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার দাপ্তরিক কাজে বাধা দিলে, কর্মকর্তাকে হুমকি দিলে বা তাঁর সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করলে ১৪ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

এ ছাড়া কোস্টগার্ডের কোনো সদস্য জুয়া খেললে বা মদ্যপ অবস্থায় মাতলামি করলে তিনি সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। কেউ মিথ্যা জেনেও অন্য কোনো সদস্যদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের কাছে মিথ্যা অভিযোগ করলে সেই ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৩ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কিত বিবৃতিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিদ্যমান আইনটি অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত। যে কারণে কোস্টগার্ড বাহিনীকে বিভিন্ন জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়। তাই নতুন আইন দরকার।

১৯৯৪ সালে সংসদে সিদ্ধান্ত প্রস্তাব গ্রহণের মাধ্যমে কোস্টগার্ড আইন করা হয়। সরকারি দল সিদ্ধান্ত প্রস্তাবটি বাতিলের প্রস্তাব করলে বিরোধী দল আপত্তি জানায়। শেষ পর্যন্ত বিরোধী দলীয় সদস্যদের ভোটে বিলটি পাস হয়েছিল। ওই দিন সংসদে সরকারি দলের সদস্যদের চেয়ে বিরোধী দলীয় সদস্যদের উপস্থিতি বেশি ছিল।