নারীর নেতৃত্বে প্রথম পুলিশ প্যারেড

চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার
চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার

বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো নারী কর্মকর্তা পুলিশ সপ্তাহের প্যারেডে নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছেন। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মাঠে শুরু হওয়া পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্যারেডের মধ্য দিয়ে শুরু হবে এই পুলিশ সপ্তাহের কার্যক্রম। অধিনায়ক হিসেবে প্যারেডের নেতৃত্ব দেবেন চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) শামসুন্নাহার। গতকাল সোমবার পুলিশ সদর দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী সারা দেশের পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সমন্বয়ে গঠিত ১৩টি কনটিনজেন্টের (মহানগর পুলিশ, রেঞ্জ পুলিশ, আর্মড পুলিশ, র্যা বসহ পুলিশের ১৩টি দল) এই প্যারেড পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করবেন। এসপি শামসুন্নাহারের নেতৃত্বে পরিচালিত এই প্যারেডে অংশ নিচ্ছেন সহস্রাধিক পুলিশ সদস্য। লৈঙ্গিক সমতা এবং নারীর ক্ষমতায়নে এটা নতুন মাইলফলক।
নারী কর্মকর্তাকে প্যারেড অধিনায়ক নির্বাচন করার বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোখলেসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল দুটি। একটি হলো নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া, আরেকটি লৈঙ্গিক সমতা। গত বছর পুলিশ সপ্তাহে প্যারেডে উপ-অধিনায়ক ছিলেন একজন নারী। এবার আমরা অধিনায়কের দায়িত্ব একজন নারী কর্মকর্তাকে দিয়েছি।’
এবারের পুলিশ সপ্তাহে ২০১৫ সালে অসীম সাহসিকতা, বীরত্বপূর্ণ কাজ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণের মাধ্যমে প্রশংসনীয় অবদানের জন্য ১৯ পুলিশ সদস্যকে বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম), ২০ জনকে রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম), ২৩ জনকে বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)-সেবা ও ৪০ জনকে রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম)-সেবা দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী তাঁদের পদক পরিয়ে দেবেন।
প্রথম আলোর চাঁদপুর প্রতিনিধি জানতে চাইলে মুঠোফোনে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় শামসুন্নাহার বলেন, ‘২০০১ সাল থেকে পুলিশ একাডেমির সারদার ক্যাম্প থেকে প্যারেড করে আসছি, আমি অপেক্ষায় ছিলাম দিনটির জন্য। কারণ, প্যারেড একটি অত্যন্ত দায়িত্বশীল ও সূক্ষ্ম কাজ। এ জন্য দেশবাসীসহ সবার কাছে আমি দোয়া কামনা করছি। যাতে করে যথাযথভাবে আমি আমার দায়িত্ব পালন করতে পারি।’
পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক আলাদা বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তাঁর বাণীতে বলেন, ‘শৃঙ্খলা-নিরাপত্তা-প্রগতি—এই মূলমন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে বাংলাদেশ পুলিশ জনসেবা প্রদান ও জননিরাপত্তা বিধানে আরও পেশাদার এবং আন্তরিক হবে, এ আমার দৃঢ় বিশ্বাস।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক ও স্থানীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। দেশের সব প্রয়োজন ও সংকটকালে পুলিশ জনগণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধানে দেশপ্রেম, নিষ্ঠা ও পেশাদারির সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও পুলিশের সাফল্য ও গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা বাংলাদেশকে বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে অনন্য মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছে।