চাচাতো ভাইয়ের অ্যাসিডে ঝলসে গেল স্কুলছাত্রী

অ্যাসিড সন্ত্রাস
অ্যাসিড সন্ত্রাস

সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামে বখাটে চাচাতো ভাইয়ের ছোড়া অ্যাসিডে ঝলসে গেছে হাসিনা খাতুন (১৩) নামের এক স্কুলছাত্রী। গত রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির পর অবস্থার অবনতি হওয়ায় গতকাল সোমবার হাসিনা খাতুনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, বেলকুচি উপজেলার ধুকুরিয়া বেড়া ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা আবদুল হামিদ। তাঁর মেয়ে হাসিনা খাতুন স্থানীয় সাতলাঠি গার্লস স্কুলে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী। অনেক দিন ধরে একই গ্রামের আবদুল বারিকের ছেলে ও হাসিনার আপন চাচাতো ভাই ডলার হোসেন তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেওয়া ছাড়াও উত্ত্যক্ত করছিল। ডলার খামার উল্লাপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র। সম্প্রতি ডলার তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু হাসিনা প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।
সূত্র আরও জানায়, দুদিন আগে একটি পরিবার থেকে বিয়ের প্রস্তাব এলে হাসিনার পরিবার তাতে সম্মতি দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয় ডলার। রোববার রাত ১০টার দিকে হাসিনা বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিল। এ সময় ডলার জানালা দিয়ে তার ওপর অ্যাসিড ছুড়ে পালিয়ে যায়। অ্যাসিডে হাসিনার গলা, মুখ, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান ঝলসে গেছে।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ফরিদুল ইসলাম জানান, অ্যাসিডে হাসিনার শরীরের প্রায় ৩৫ ভাগ ঝলসে গেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
হাসিনার বাবা আবদুল হামিদ বলেন, ‘ডলার সম্পর্কে আমার ভাতিজা। বেশ কিছুদিন ধরে সে হাসিনাকে বিয়ের প্রস্তাব দিচ্ছিল। হাসিনা প্রাপ্তবয়স্ক নয়। তা ছাড়া আত্মীয়ের মধ্যে হওয়ায় ডলারের সঙ্গে আমরা বিয়েতে রাজি হইনি। সে বলত, অন্য কোথাও বিয়ে দিলে অ্যাসিড মেরে হাসিনার মুখ বিকৃত করে দেওয়া হবে। এখন এটাই ঘটল।’
বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হাই সরকার বলেন, রোগী (হাসিনা) নিয়ে ব্যস্ত থাকায় এখন পর্যন্ত কেউ মামলা করতে আসেনি। তবে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে ওই ঘটনায় অভিযুক্ত ডলারের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের কারও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।