কোহিনূর কেমিক্যালের আইনজীবী গ্রেপ্তার

কোহিনূর কেমিক্যালস কোম্পানি লিমিটেডের আইন বিভাগের এক কর্মকর্তাকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মণিপুরিপাড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যা ব। পলাশ কুমার রায় নামের ওই আইনজীবীকে ‘অপহরণ করা হয়েছে’ বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে তাঁর মা কয়েক দিন আগে কোহিনূরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছিলেন।
র্যা বের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ’ করে ‘প্রতারক’ ওই আইনজীবী ২৪ দিন ধরে ‘নিজেই আত্মগোপনে’ ছিলেন। মায়ের সঙ্গে তাঁর ‘নিয়মিত যোগাযোগ’ ছিল বলেও র্যা বের কাছে তথ্য-প্রমাণ রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রাজধানীর মণিপুরিপাড়া থেকে র্যা ব-২-এর একটি দল তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
র্যা বের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পলাশ কুমার ২০১৩ সালের নভেম্বর থেকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কোহিনূর কেমিক্যালে চাকরি করতেন। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি বিনা নোটিশে কর্মস্থলে আসা ছেড়ে দেন। এ সময় কোম্পানির হিসাবেই ৩১ লাখ ৭ হাজার ৫০ টাকার গরমিল পাওয়া যায়। কোম্পানির অর্থ ও দলিলসমূহ বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য গত ২৩ মার্চ কোহিনূরের পক্ষ থেকে তাঁকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। কিন্তু এর জবাব না পেয়ে ৩১ মার্চ কোহিনূর ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে একটি মামলা করে। এ মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়।
র্যা বের দাবি, এ থেকে বাঁচা ও অর্থ আত্মসাতের জন্য গত ২৯ মার্চ পলাশ আত্মগোপনে চলে যান। এর পরদিন তাঁর মা মীরা রানী রায় তেজগাঁও থানায় ‘পলাশ নিখোঁজ রয়েছে’ দাবি করে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। একইভাবে গত ৪ এপ্রিল মীরা রানী বাদী হয়ে ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে একটি অপহরণ মামলা করেন। এতে অভিযোগ করেন, তাঁর ছেলেকে গুম করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পরদিন মীরা রানী সংবাদ সন্মেলন করে বলেন, তাঁর ছেলে বেঁচে আছে না মারা গেছে, তা জানেন না। পাশাপাশি জীবিত বা মৃত ছেলেকে তিনি ফেরত চান।
পাল্টাপাল্টি মামলা ও পুরো ঘটনা র্যা বের কাছে রহস্যজনক মনে হয়। র্যা ব এ ঘটনা তদন্তে গিয়ে জানতে পারে, পলাশ স্বেচ্ছায় গোপন অবস্থানে আছেন। তিনি কৌশলে তাঁর মায়ের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার আইনজীবী ঐক্য পরিষদের (ঢাকা বার) ব্যানারে এ নিয়ে একটি মানববন্ধনও হয়।
র্যা ব জানিয়েছে, পলাশের পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারীর বড়সিংহ গ্রামের প্রণব কুমার রায়ের ছেলে। রাজধানীর তেজকুনিপাড়ায় তিনি থাকতেন। মণিপুরিপাড়ায় তিনি এক স্বজনের বাসায় গোপনে অবস্থান করছিলেন।