'ঝুঁকিপূর্ণ' কেন্দ্র নিয়ে দুশ্চিন্তায় স্বতন্ত্র ও বিএনপির প্রার্থীরা

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচন কাল শনিবার। এসব ইউপির ৫৪ কেন্দ্রের সব কটিকেই গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। আর এসব ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন বিএনপি ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা। তাঁরা এসব কেন্দ্রে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদারের দাবি জানিয়েছেন।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, কাল শনিবার চকরিয়া উপজেলার পশ্চিম বড় ভেওলা, ঢেমুশিয়া, পূর্ব বড় ভেওলা, বদরখালী, কোনাখালী ও বিএমচর ইউনিয়নে নির্বাচন হবে। এসব ইউনিয়নে মোট ভোটকেন্দ্র ৫৪টি। এর মধ্যে ১০টি ভোটকেন্দ্রকে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অন্য ৪৪টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ।
বিএমচর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী এস এম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা প্রকাশ্যে ভোটকেন্দ্র দখল করার হুমকি দিচ্ছেন। ছয়টি ভোটকেন্দ্র অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে নিরাপত্তা বাড়াতে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ভোটাররা সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে চান। প্রশাসনকে ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
বদরখালীতে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আ ন ম হেফাজ সিকদার বলেন, বদরখালী কলেজ কেন্দ্রসহ ছয়টি ভোটকেন্দ্র চরম ঝুঁকিপূর্ণ। ভোটাররা এসব কেন্দ্রে যেতে ভয় পাচ্ছেন। এই ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থী আহসানুল কাদের চৌধুরী বলেন, চারটি কেন্দ্র অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। প্রশাসনকে এসব কেন্দ্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে হবে।
ঢেমুশিয়া ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থী নুরুল আলম বলেন, আওয়ামী লীগের লোকজন পাঁচটি ওয়ার্ডে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে নিষেধ করছেন। সকাল ১০টার মধ্যে ভোট শেষ হয়ে যাবে বলেও প্রচার করছেন।
পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থী আনোয়ারুল আরিফ বলেন, তাঁর ইউনিয়নের সব ভোটকেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ। ইতিমধ্যে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা এলাকায় টহল দিচ্ছে। এতে সুষ্ঠু ভোট হওয়া নিয়ে ভোটাররা শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
বদরখালী ইউনিয়নের পুকপুকুরিয়া গ্রামের ভোটার মো. ইউছুফ (৫০) বলেন, বহিরাগত সন্ত্রাসীরা এলাকায় অবস্থান করার ফলে ভোটের সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এরপরও প্রশাসন কঠোর থাকলে তাঁরা সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারবেন।
বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহসিন বাবুল বলেন, ‘ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে অভিযোগের তির সব সময় থাকে। আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা কাউকে হুমকি-ধমকি দিয়েছেন কি না, জানা নেই। তবে আমরাও চাই সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট হোক। কারণ, এর সঙ্গে সরকারের ভাবমূর্তির বিষয়টি জড়িত।’
জানতে চাইলে কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল-চকরিয়া) মো. মাসুদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যে পরিমাণ সদস্য ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকবেন, তাতে কারও মনে শঙ্কা থাকার কথা নয়। প্রার্থীরা যেসব ভোটকেন্দ্র নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন, সেসব কেন্দ্রে বাড়তি নজরদারি থাকবে।