জুড়ীতে তোপের মুখে পাউবোর কর্মকর্তারা

মৌলভীবাজারের জুড়ী নদীর ভাঙনকবলিত প্রতিরক্ষা বাঁধ পরিদর্শনে গিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধিদের তোপের মুখে পড়েন। ওই কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণে বাঁধ ভেঙে উপজেলার ২৩টি গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় এলাকাবাসী তাঁদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার সকাল থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে জুড়ী নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের জায়ফরগর ইউনিয়নের গৌরীপুর গ্রামে দুটি, পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের উত্তর ভবানীপুর গ্রামে একটি, সাগরনাল ইউনিয়নের কাশিনগর গ্রামে দুটি, রানীমোড়ায় একটি ও বরইতলি গ্রামে দুটি, গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের পূর্ব শিলুয়া গ্রামে একটি ও পশ্চিম শিলুয়া গ্রামে একটি এবং ফুলতলা ইউনিয়নের দক্ষিণ সাগরনাল গ্রামে একটি ও বিরইনতলা গ্রামের একটি স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। এতে পানি ঢুকে এসব ইউনিয়নের ২৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে অন্তত ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে পাউবোর কয়েকজন কর্মকর্তা জায়ফরনগরের গৌরীপুর গ্রামে ভাঙনকবলিত স্থান পরিদর্শনে যান। একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন তাঁদের দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গুলশান আরা চৌধুরী ও জায়ফরনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাছুম রেজা সেখানে ছুটে যান। এ সময় দীর্ঘদিন ধরে বাঁধগুলো মেরামত না করায় তাঁরা পাউবোর কর্মকর্তাদের দায়ী করেন। পরে পাউবোর কর্মকর্তারা বাঁধগুলো মেরামতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কিশোর রায় চৌধুরী বলেন, এসব বাঁধ মেরামতের ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের মাসিক সমন্বয় সভায় একাধিকবার পাউবোর কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানানো হয়েছে। কিন্তু সময়মতো মেরামত না করায় পাহাড়ি ঢলে বাঁধগুলো ভেঙে মানুষ দুর্গতিতে পড়েছে। পাউবোর কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণেই এ অবস্থা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
পাউবোর মৌলভীবাজার কার্যালয়ের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী-২ মো. ইমান আলী বাঁধ সংস্কারে তাঁদের গাফিলতি থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বাঁধগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা সম্পর্কে তাঁর কাছে আগে কোনো তথ্য ছিল না। ভাঙনকবলিত কয়েকটি বাঁধ তাঁরা সরেজমিনে দেখেছেন। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁরা প্রতিবেদন পাঠাবেন। বরাদ্দ পাওয়া গেলে পানি কমার পর এসব বাঁধ মেরামতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।